১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাত এখন সারা বিশ্বের লড়াই : তুরস্ক

ওআইসির ১৫তম সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান : ইন্টারনেট -

দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এখন আর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সঙ্ঘাত নয় বরং এটি সারা বিশ্বের নিপীড়ক ও নিপীড়িতদের মধ্যে লড়াই বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। শনিবার অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এই সতর্ক করেন।
ফিদান গাম্বিয়ার রাজধানী বানজুলে ওআইসি সম্মেলনে বক্তৃতায় ইসরাইলের কয়েক দশক ধরে দখলদারিত্ব, অবৈধ সম্প্রসারণ, অবরোধ এবং আক্রমণের মুখে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
তিনি বলেন, দখল প্রতিরোধের ইসরাইলের বিরুদ্ধে এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরো খারাপ বিপর্যয় হতে পারে। তিনি সতর্ক করে বলেন, রাফাহতে ইসরাইলের পরিকল্পিত আগ্রাসনের ফলে ওই অঞ্চলে একটি অভূতপূর্ব বিপর্যয় ঘটতে পারে। তেল আবিবকে এই অপরাধের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করতে এবং একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে পৌঁছানোর জন্য বিশ্বের সব দেশকে ইসরাইলকে চাপ দিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইসরাইলকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করা হতে হবে। ফিদান বলেন, তুরস্ক ঘোষণা করেছে যে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অমানবিক সামরিক অভিযানের জন্য ইসরাইলের সাথে সব বাণিজ্য কার্যক্রম স্থগিত করছে, যতক্ষণ না স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা প্রবাহের অনুমতি দেয়।
তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধ করায় বেকায়দায় ইসরাইল
এদিকে আলজাজিরা জানায়, ফিলিস্তিনের গাজায় যত দিন বর্বরতা বন্ধ না করা হবে তত দিন ইসরাইলের সাথে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক। গত ২ মে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে দেশটি। তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধ করার তিন দিনের মাথায় ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ক্যালকালিস্ট জানিয়েছে, তুরস্কের এই বাণিজ্য বয়কটের প্রভাব আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পড়া শুরু হবে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তুরস্কের এই সিদ্ধান্তের কারণে ইসরাইলে মৌলিক পণ্য, খাদ্যপণ্য এবং বাড়িঘরের দাম বেড়ে যাবে। ইসরাইলি এ সংবাদমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, তুরস্ক বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার পর ইসরাইলি সরকার বেশ অবাক হয়েছে। কারণ তারা ভেবেছিল তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিলেও; এটি কখনো কার্যকর করবে না। কিন্তু তাদের অবাক করে দিয়ে তার্কিস প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেন।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের বিকল্প বের করতে লম্বা সময় প্রয়োজন হবে। সাথে নতুন করে চুক্তিও করতে হবে। এমনকি বিকল্প কোনো দেশের সাথে চুক্তি করলেও পণ্যের দাম বেশিই থাকবে। পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির এই ভার সাধারণ ইসরাইলিদেরই বহন করতে হবে। যারা যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে আগের তুলনায় বেশি দাম দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন। তুরস্কের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে ইসরাইলি নির্মাণ শিল্পের ওপর। সাথে অটোমোবাইল খাতেও এটির প্রভাব পড়বে। কারণ বেশির ভাগ অটোমেকাররা জনপ্রিয় সব গাড়ি তুরস্ক থেকে ইসরাইলে নিয়ে আসে।


আরো সংবাদ



premium cement