ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের আহ্বান হোয়াইট হাউজের
কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ- এএফপি
- ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিয়ে যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে তা যেন শান্তিপূর্ণ হয় সে লক্ষ্যে আহ্বান জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। গত কয়েক সপ্তাহে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুলিশ ২৭৫ জনকে গ্রেফতারের পর হোয়াইট হাউজ থেকে এই বার্তা এলো। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য এবিসি গণমাধ্যমের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের প্রতি সম্মান জানাই।’
জন কিরবি বলেন, ‘তবে আমরা ইহুদিবিদ্বেষী ভাষার নিন্দা জানাই যা আমাদের কানে এসেছে। আমরা সেখানে সবধরনের ঘৃণাসূচক উক্তি ও সহিংসতার হুমকির নিন্দা জানাই।’ নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সটিতে সবার আগে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। তবে তা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। অধিকাংশ ক্যাম্পাসে পরিবেশ শান্ত থাকলেও কিছু ক্যাম্পাস থেকে প্রতিবাদকারীদের আটক করা হয়। এ সময় পুলিশকে দাঙ্গা দমনের পোশাক পরে যন্ত্রণাদায়ী রাসায়নিক পদার্থ ও টেসার বুলেট ব্যবহার করতে দেখা যায়।
বোস্টনের নর্থ-ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ১০০ জন, সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে ৮০ জন, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ৭২ জন এবং ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি থেকে ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রেফতার করা ব্যক্তিদে মধ্যে ছিলেন গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্সিয়াল পদপ্রার্থী জিল স্টেইন। তিনি অভিযোগ করেছেন, পুলিশ সমস্যা প্রশমনের চেয়ে উসকে দিতে বেশি কাজ করেছে।
জিল স্টেইন এ বিষয়ে সিএনএনকে বলেন, ‘এটা একটি জটিল ইস্যুতে বাকস্বাধীনতার বিষয়। আর সেখানে তারা দাঙ্গা পুলিশ পাঠাচ্ছে মূলত দাঙ্গা সৃষ্টি করার জন্য।’ গত রোববার ইয়েল ইউনিভার্সিটির প্রতিবাদকারীরা একটি নতুন শিবির গড়ে তোলে ক্যাম্পাসে। এর আগে পুলিশ বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাদের তৈরি একটি শিবির উচ্ছেদ করে দেয়। গ্রেফতার করা হয় বেশ কয়েকজনকে।
এ দিকে চূড়ান্ত পরীক্ষাকে সামনে রেখে কিছু ক্যাম্পাসে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার স্টেট পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি। ক্যাম্পাসে অুষ্ঠিত হওয়া এসব বিক্ষোভ থেকে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে অস্ত্রবিরতির ডাক দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের কলেজগুলোকে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক ত্যাগের জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অব্যাহত হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৪৫৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই নিরীহ শিশু ও নারী।
কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ
এদিকে সিবিসি নিউজ থেকে জানা যায়,ফিলিস্তিনের গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে আমেরিকার ৪০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কয়েক শ’ বিক্ষোভকারীকে আটক করে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন। মূলত নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই এবার কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ। মার্কিন ক্যাম্পাসের আন্দোলনের মিল রেখে ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও তাঁবু টানিয়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্দোলনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ম্যাকগিল এবং কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে তহবিল প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতর এভাবে তাঁবু টানানো অনুমোদিত নয়। এই ধরনের কার্যকলাপ যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো মুখোমুখি পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ফিলিস্তিনি যুব আন্দোলন মন্ট্রিয়েল শাখা অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান (তাঁবুতে) কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। গ্রুপটি বলছে, তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে গণহত্যায় অংশীদার হতে দিতে চায় না। ফিলিস্তিনপন্থী একাধিক গ্রুপ এই আন্দোলনে যোগ দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে আসছে। ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সম্পর্কে অবগত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন যে পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে অনুমোদন করে সেই সীমা পর্যন্ত তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে তারা সম্মান করবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা