ফিলিস্তিন সমস্যার ন্যায্য ও স্থায়ী সমাধান চায় চীন
- সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
- ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন, তার দেশ ফিলিস্তিন সমস্যার ন্যায়সঙ্গত এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চায়। বৃহস্পতিবার রাজধানী বেইজিংয়ে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসানের সাথে একটি বৈঠকের সময় তিনি এই কথা বলেছেন।
ওয়াং তার মালয়েশিয়ান প্রতিকক্ষ মোহাম্মদ হাসানের সাথে বেইজিংয়ে একটি বৈঠকের সময় বলেছেন, ফিলিস্তিন সমস্যার ন্যায্য এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য চীন মালয়েশিয়ার সাথে কাজ করতে চায়। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২৩ এপ্রিল, মঙ্গলবার তিন দিনের জন্য চীন সফরে যান। ২৫ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সফরের শেষ দিনে তিনি ওয়াং ই এর সাথে বৈঠক করেছেন।
মোহাম্মদ হাসান বলেছেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাতে চীনের অবস্থানের প্রশংসা করে মালয়েশিয়া। তিনি জানিয়েছেন, তার দেশ বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে বহিরাগত শক্তির হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে। এই অঞ্চলে বিদেশী হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানানো হবে না।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ চীন সাগরের উপর আঞ্চলিক দাবি রয়েছে এমন কয়েকটি দেশের একটি মালয়েশিয়া। এ দিকে আসিয়ানের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, উদীয়মান অর্থনীতি এবং মুসলিম বিশ্বের একটি ইতিবাচক ও স্থিতিশীল শক্তি হিসেবে মালয়েশিয়ার প্রশংসা করেছেন ওয়াং। তিনি বলেছেন, চীন মালয়েশিয়ার সাথে সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে গ্লোবাল সাউথের স্বার্থে কথা বলবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। ৬ মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ৩৪ হাজার ৩০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং অন্তত ৭৭ হাজার ৩০০ আহত হয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগই নারী এবং শিশু ছিল।
গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র
এদিকে রয়টার্স থেকে জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে। মে মাসেই সেখান থেকে মানবিক সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ইসরাইলের চলমান সামরিক অভিযানের কারণে স্থলপথে গাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাঠানোর কাজ অত্যন্ত কঠিন। তাই মানবিক সাহায্য পাঠাতে মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলের কাছে সমুদ্রের ওপর অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে।
আগামী মে মাসেই সেটি প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কথা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মার্চ মাসে এই ঘোষণা করেছিলেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই উদ্যোগের আওতায় গাজার মাটিতে কোনো মার্কিন সেনা পা রাখবে না।
মার্কিন সেনাবাহিনীর তৈরি অস্থায়ী বন্দর গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জন্য বাস্তবে কত পরিমাণ ত্রাণ পাঠাতে সাহায্য করবে এবং সেই সহায়তা স্থলপথে কিভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে গাজার উত্তরে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বেড়ে চলায় জরুরি সহায়তার প্রয়োজনের কথা বলছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, অস্থায়ী বন্দরে পাঠানো মানবিক সাহায্য ইসরাইলি চেকপোস্টের অনুমোদনের পর গাজার অভ্যন্তরে পাঠানো যাবে। হামাসের যোদ্ধাদের কাছে কোনো ধরনের ত্রাণ যাতে না পৌঁছায়, ইসরাইল তা নিশ্চিত করতে চায়। জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও ইসরাইল গোটা প্রক্রিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায়। জাতিসঙ্ঘের সূত্র অনুযায়ী, ইসরাইলি চেকপয়েন্টে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর কাজ বর্তমান সঙ্কটের শুরু থেকেই বেশ কঠিন ছিল। এমনকি সাইপ্রাসের ভূখণ্ডে ইসরাইলের কর্তৃপক্ষ সেই ত্রাণসহায়তা পরীক্ষা করার পরেও সেই বিলম্ব এড়ানো যাচ্ছে না।
অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শেষ হলে প্রথম পর্যায়ে দিতে ৯০টি ট্রাক সেখান থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারবে। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে ১৫০ ট্রাক সেই বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে। ইসরাইলি চেকপোস্টের ওপর ট্রাক চলাচলের গতি অনেকটাই নির্ভর করবে। ইসরাইসি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সেখানে নিরাপত্তা ও লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে। মার্কিন সৈন্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কয়েক হাজার সেনাদের এক বিশেষ ব্রিগেড সক্রিয় রয়েছে। উল্লেখ্য, নির্মীয়মান অস্থায়ী বন্দরের কাছাকাছি বুধবার মর্টার হামলা ঘটেছে।
অস্থায়ী বন্দরের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত নির্বিঘে্ন মানবিক সাহায্য পাঠানো সম্ভব হলেও রাফায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ঘোষিত অভিযানের কারণে গাজার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ত্রাণ বণ্টনের কাজ আরো বিপজ্জনক ও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরাইলের সেনাবাহিনী সেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বদ্ধপরিকর। সেই অভিযান শুরু হলে গাজার উত্তরের পর দক্ষিণ অংশেও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো আশঙ্কা করছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা