২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চীন-সৌদি ঘনিষ্ঠতায় যুক্তরাষ্ট্রের কপালে চিন্তার ভাঁজ

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও শি জিন পিং -

একমুখী সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। আমরা আরো বৈচিত্র্যময় সম্পর্কের মধ্যে চলে এসেছি : সৌদি বিশ্লেষক

চীনের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক আরো গভীর হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে বেইজিংয়ের নেতৃত্বাধীন এশীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ব্লক সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) যোগদানের কাছাকাছি চলে গেছে। ব্লকটির সংলাপের অংশীদার থেকে পূর্ণ সদস্য পদ পেতে পারে সৌদি আরব। মধ্যপ্রাচ্যে চীনের এই ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কপালে। এসসিও মূলত সাবেক সোভিয়েতভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর একটি জোট, যেখানে রাশিয়া ও চীন ছাড়াও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভারত-পাকিস্তানও রয়েছে।
চলতি মাসেই ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে একটি যুগান্তকারী চুক্তির মধ্যস্থতা করেছে চীন। আঞ্চলিক বৈরী এ দেশ দু’টির মধ্যে ফের শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। সৌদি আরব সোমবার চীনের রোংশেং পেট্রোকেমিক্যালের ১০ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য ৩৬০ কোটি ডলারের চুক্তি করেছে। এর বদৌলতে চীনের এই প্রতিষ্ঠানকে সৌদি আরব দৈনিক চার লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করবে।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ক্রমবর্ধমান মেরুকৃত বিশ্বে চীন ও রাশিয়ার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হচ্ছে। ঠিক এ সময়ে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো তাদের বৈশ্বিক অংশীদারিত্বকে বৈচিত্র্যময় করার জন্য চীন ও রাশিয়াকে বেছে নিচ্ছে। সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর আরো কাছাকাছি সম্পর্কে চলে যাচ্ছে চীন।
সৌদি বিশ্লেষক ও লেখক আলি শিহাবি বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঐতিহ্যগত একমুখী সম্পর্ক এখন শেষ হয়ে গেছে। আমরা আরও খোলামেলা সম্পর্কের মধ্যে চলে এসেছি; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শক্তিশালী কিন্তু চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং অন্যান্যের সাথে সমান শক্তিশালী সম্পর্ক।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রিমা বিনতে বান্দর আল সৌদ অক্টোবরে রিয়াদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে বলেছিলেন, ‘এই দেশ পাঁচ বছর আগের দেশ নয়, ১০ বছর আগের দেশ নয়। সুতরাং বিদ্যমান প্রতিটি বিশ্লেষণ এখন আর প্রাসঙ্গিক নয়।’
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব অ্যাডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (এসএআইএস) মধ্যপ্রাচ্য অধ্যয়ন এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ের অধ্যাপক ভ্যালি নাসর বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার মধ্যপ্রাচ্য নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। কারণ সৌদি আরব সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারণার ভিত্তিতে এই নীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল।’
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতিভিত্তিক কার্যক্রমে মনোযোগ এবং আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়ে খেলার প্রতি বেইজিংয়ের অনীহার কারণে মধ্যপ্রাচ্য চীন-যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র হয়ে উঠার সম্ভাবনা কম। ফলে সৌদি-চীন সম্পর্কও পূর্ণাঙ্গ জোটে রূপ নেয়ার সম্ভাবনা কম।


আরো সংবাদ



premium cement