২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের হামলায় ২ ডজনের বেশি সৈন্য নিহত

যাত্রীবাহী বিমান লক্ষ্য করে গুলি
-

প্রতিরোধ যোদ্ধা ও জাতিগত সশস্ত্র বিভিন্ন গোষ্ঠীর হামলায় মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর দুই ডজনের বেশি সদস্য নিহত হয়েছেন। হামলায় নিহতদের মধ্যে জান্তা সামরিক বাহিনীর অন্তত চারজন ক্যাপ্টেনও রয়েছেন বলে ইরাবতির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাখাইন, মন, শান, কারেন প্রদেশ এবং মান্দালয়, স্যাগাইং ও ইয়াঙ্গুন অঞ্চলে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফএস) ও জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর (ইএও) যোদ্ধাদের হামলায় জান্তা বাহিনীর এসব সদস্য নিহত হয়েছেন।
ইরাবতি বলছে, বৃহস্পতিবার মান্দালয়ের আমারাপুরা টাউনশিপে সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে করে আট বন্দীকে পরিবহনের সময় ট্রুথ কিপিং ফোর্সের আমারাপুরার প্রতিরোধ যোদ্ধারা আকস্মিক হামলা চালিয়েছে। এ সময় ওই গাড়ি থেকে দুই রাজনৈতিক বন্দীকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এই হামলায় জান্তা বাহিনীর দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। হামলার সময় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লেইং মান্দালয় সফর করছিলেন।
একই দিনে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় দেশটির জান্তা পুলিশের এক সদস্য ও প্রশাসনিক দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। বিকেলে ইয়াঙ্গুন শহরের কেন্দ্রস্থলের একটি ধর্মীয় ভবন পাহারা দেয়ার সময় পুলিশ কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হামলার পর দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে একজন ট্রিশা চালক এবং এক বেসামরিক নাগরিককে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাখাইন প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী বৌদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা হামলা চালিয়ে জান্তা বাহিনীর অন্তত ১২ সদস্যকে হত্যা করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রাখাইনের ম্রাউক-ইউ টাউনশিপ, রাথেডং এবং পন্নাজিয়ুনে হামলা চালিয়ে ওই সৈন্যদের হত্যা করেছে আরাকান আর্মি।
একই দিন বিকেলের দিকে ম্রাউক-ইউ টাউনশিপের মাউং সাওয়ে গ্রামের কাছে আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের মাইন হামলায় ১০ জান্তা সৈন্য নিহত হয়েছেন। পরে হামলার জবাবে ম্রাউক-ইউভিত্তিক জান্তা বাহিনীর ৩৭৮ ব্যাটালিয়ন মাউং সাওয়ে গ্রাম লক্ষ্য করে গোলাবারুদ নিক্ষেপ করে। এতে তিন বছর বয়সী এক মেয়ে শিশু ও ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর আহত হয়।
এদিকে আলজাজিরা জানায়, মিয়ানমারে একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজকে লক্ষ্য করে বন্দুক হামলা হয়েছে। হামলায় একজন যাত্রী আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিমানের বাইরের কাঠামো। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৯টায় দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কায়াহর রাজধানী লোইকোতে ঘটে এই ঘটনা। উড়োজাহাজটি এ সময় প্রায় এক হাজার মিটার ওপরে ছিল এবং ৬৩ জন যাত্রী ছিলেন সেটিতে।
তবে উড়োজাহাজটি নিরাপদে বিমানবন্দরে অবতরণে সক্ষম হয়। হামলার শিকার উড়োজাহাজটি মিয়ানমারের সরকারি বিমান পরিষেবা সংস্থার।
সামরিক সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী কারেন্নি ন্যাশনাল প্রগ্রেসিভ পার্টির হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মিয়ানমারে কয়েকটি সরকারবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে। সেসবের মধ্যে কারেন্নি ন্যাশনাল প্রগ্রেসিভ পার্টি অন্যতম। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় তিন প্রদেশ কারেন, কায়াহ ও কাচিনজুড়ে তাদের সংগঠন ও কার্যক্রম বিস্তৃত।
তবে কারেন্নি ন্যাশনাল প্রগ্রেসিভ পার্টি বন্দুক হামলার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement