১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রুশ সেনাদের উদ্দেশে জেলেনস্কির হুঁশিয়ারি

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গুলি ছুড়লে ব্যবস্থা

-

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, অবরুদ্ধ জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যদি কোনো রুশ সেনা গুলি ছোড়েন, তবে তাকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিশেষ লক্ষ্যবস্তু করা হবে। ইউক্রেনের কিয়েভ থেকে গত শনিবার রাতে দেয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
গত মার্চে ব্যাপক লড়াইয়ের পর রাশিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দখল নেয়। এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। দক্ষিণাঞ্চলীয় ইউক্রেনীয় শহর নিকোপলে কৌশলগতভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকায় এর অবস্থান। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাশিয়ার দখলে গেলেও ইউক্রেনীয় প্রযুক্তিবিদেরা এখনো এটি পরিচালনা করছেন।
জেলেনস্কির অভিযোগ, মস্কো বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে একটি রুশ সেনাঘাঁটিতে পরিণত করেছে এবং এটিকে ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ হিসেবে ব্যবহার করছে। শনিবারের ভাষণে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যে রুশ সেনা কর্মকর্তাই পারমাণবিক কেন্দ্র লক্ষ্য করে গুলি ছুড়বে কিংবা পারমাণবিক কেন্দ্রে লুকিয়ে থেকে সেখান থেকে গুলি করবে, তাকে অবশ্যই আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী, বিশেষ বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর বিশেষ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে হবে।’
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে পারমাণবিক কেন্দ্রটিকে লক্ষ্য করে গোলা হামলা হয়েছে। এর জন্য মস্কো ও কিয়েভ একে অপরকে দায়ী করেছে। জেলেনস্কি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গুলি ছোড়ার মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকভাবে উসকানি দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এটিকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে রুশ বাহিনী নিকোপল এবং পাশের শহর মারগানেৎসে গোলা হামলা চালাতে পারে।
জেলেনস্কি আরো বলেন, রাশিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দখল নেয়ায় প্রতিদিনই ইউরোপের জন্য বিকিরণের হুমকি বাড়ছে। সম্প্রতি বিবিসির এক খবরে বলা হয়, ওই কেন্দ্রে অবস্থানকারী ইউক্রেনীয় কর্মীদের অনেককে সশস্ত্র রুশ সেনারা পাহারা দিয়ে রেখেছেন।
জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে বারবার ওই স্থাপনায় রকেট হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে। এমন হামলা সেখানে পারমাণবিক দুর্ঘটনার হুমকি তৈরি করছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরিচালনাকারী সংস্থা জানিয়েছে, স্থাপনাটির আশপাশে গত সপ্তাহ থেকে রকেট হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায়, এটি এখন তেজস্ক্রিয়তা ও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাপনার মান লঙ্ঘনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এটিই ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী, এনেরগোঅ্যাটম জানায় যে নাইট্রোজেন-অক্সিজেন স্টেশন, অভ্যন্তরীণ সুয়ারেজ পাম্প করার স্টেশন এবং সম্মিলিত সহায়ক ভবনগুলো গোলাবর্ষণে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া এতে ব্যবহার করার জন্য রাখা শুষ্ক পারমাণবিক জ্বালানি সংরক্ষণগারের আশপাশে ‘তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা পর্যবেক্ষণের তিনটি সেনসর’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানায় এনেরগোঅ্যাটম। এনেরগোঅ্যাটম জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বাইরে অবস্থিত দমকল বাহিনীর উপরও হামলা চালানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement