২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লিবিয়ায় পণ্য মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ, পার্লামেন্টে হামলা

পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের দাবি বিক্ষোভকারীদের
পূর্বাঞ্চলীয় শহর তোবরুকে পার্লামেন্টের একাংশ বিক্ষোভকারীদের দেয়া আগুনে জ্বলছে : এএফপি -

বিক্ষোভ সহিংসতায় উত্তাল লিবিয়ার বিভিন্ন শহর। শুক্রবার তোবরুকে পার্লামেন্ট ভবনের একাংশে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে ক্ষুব্ধ জনতা। তীব্র বিদ্যুৎ সঙ্কট, মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় দীর্ঘদিন ধরেই জর্জরিত দেশটি। প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরে আবার রাজপথে নামে মানুষ। পূর্বাঞ্চলীয় শহর তোবরুকে শুক্রবার সন্ধ্যায় হঠাৎ পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে বিক্ষুব্ধরা। আগুন ধরিয়ে দেয় ভবনে। ছোড়ে ইট-পাটকেল।
ভবনের সামনেও করে অগ্নিসংযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় নিরাপত্তা বাহিনীকে। অনলাইনে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, বাইরে বিক্ষোভকারীদের জ্বালানো টায়ারের ঘন ধোঁয়া উঠছে। ক্রমাগত বিদ্যুৎঘাটতি, মূল্যবৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অচলাবস্থার বিরুদ্ধে লিবিয়ার অন্যান্য শহরে সমাবেশ হয়েছে।
কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পার্লামেন্ট ভবনের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় পার্লামেন্ট ভবন খালি ছিল। অনলাইন সংবাদমাধ্যম আল-ওয়াসাত জানায়, শুক্রবার দিনের শুরুতে অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ হয়। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রাজধানী ত্রিপোলিতে কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী সেন্ট্রাল স্কয়ারে জড়ো হন। তারা সশস্ত্র মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো ও খাদ্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি জানান।
তোবরুক বিক্ষোভের একাধিক ছবিতে দেখা যায়, বুলডোজার দিয়ে পার্লামেন্ট ভবনের ফটকের কিছু অংশ ভেঙে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর সহজেই পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভরত লোকজন। কিছু বিক্ষোভকারীকে দাফতরিক নথিপত্র ছুড়ে ফেলতে দেখা যায়। তাদের কারো কারো হাতে ছিল গাদ্দাফি আমলের সবুজ পতাকা। লিবিয়ায় কয়েক দিন ধরে লোডশেডিং চলছে। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে কিছু তেলক্ষেত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দিলে পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়।
দু’টি সরকার বর্তমানে লিবিয়ায় ক্ষমতার জন্য লড়াই করছে। রাজধানী ত্রিপোলিতে সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দিবাহ। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফাতহি বাশাগা নিজেই ক্ষমতায় থাকার দাবি করেছেন। ফাতহি তোবরুকে অবস্থিত পার্লামেন্টের সাথে জোটবদ্ধ।
লিবিয়াকে আবার রাজনৈতিকভাবে এক করার প্রচেষ্টায় ২০২০ সালে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সেটা হয়নি। পরে পূর্বাঞ্চলীয় পার্লামেন্ট জানায়, অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদের সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তার জায়গায় ফাতহি বাশাগাকে নিয়োগ দেয়ার কথা জানায় পার্লামেন্ট।
২০১১ সালে গণ-অভ্যুত্থানের একপর্যায়ে ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহীদের সাথে লড়াইয়ে মুয়াম্মার গাদ্দাফির সরকারের পতন ঘটে। বিদ্রোহীদের হাতে আটক হওয়ার পর গাদ্দাফিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর পর থেকে দেশটির বিভিন্ন পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল