২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হাউছি হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সৌদি-আমিরাতের বৈঠক

পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি আরব আমিরাতের
-

সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক সপ্তাহের মধ্যে ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীদের একাধিক হামলার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ। এ ইস্যুতে মিত্র সৌদি আরবকে সাথে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় বসেছে দেশটি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দফতর হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে ত্রিপক্ষীয় এই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে ইরান-সমর্থিত যোদ্ধারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে দ্বিতীয়বারের মতো হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র এবং তার উপসাগরীয় মিত্ররা ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে। সোমবার হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠক করেছেন। বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোতে চলমান হাউছি হামলা নিয়ে আলোচনার জন্য এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব হামলার ফলে উভয় দেশেই বেসামরিক মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
তিন দেশ কিভাবে হাউছি বিদ্রোহীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চায়, সে ব্যাপারে অবশ্য বিস্তারিত কিছু জানায়নি হোয়াইট হাউজ। সংযুক্ত আরব আমিরাত সৌদি আরবের নেতৃত্বে একটি সামরিক জোটের অংশ যারা ইয়েমেনে হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী এই বিদ্রোহীরা গত সপ্তাহে আবু ধাবির বিমানবন্দর এবং একটি জ্বালানি ডিপোতে ড্রোন হামলা চালায়। এতে তিনজন নিহত হয়। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই সোমবার হাউছি বিদ্রোহীদের দুইটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতের দাবি করে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
বিদ্রোহীদের তরফে মধ্যপ্রাচ্যের আর্থিক ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত আমিরাতে হামলার অঙ্গীকার করা হয়েছে। এমন বাস্তবতায় উপসাগরীয় অঞ্চলের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্রের সাথে বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্র। সংযুক্ত আরব আমিরাতে হামলার ঘটনায় ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীদের পাল্টা জবাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ছাড়া এই হামলার ঘটনা ছেড়ে দেয়া হবে না।
আমিরাতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই সন্ত্রাসী হামলা এবং এই ধরনের নিষ্ঠুর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার সংযুক্ত আরব আমিরাতের রয়েছে।’ হাউছি মিলিশিয়ারা আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইন লঙ্ঘন করে জঘন্য অপরাধ করেছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, এই সন্ত্রাসী মিলিশিয়ারা (হাউছি বিদ্রোহী) তাদের বেআইনি উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে এই অঞ্চলে সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি সৌদি আরবের জাজানে হাউছি মিলিশিয়াদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলারও নিন্দা জানিয়েছে আমিরাত। ওই হামলায় দুই বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছে। আমিরাতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিব্রতিতে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের নিরাপত্তা অবিভাজ্য। রিয়াদের জন্য যেকোনো হুমকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়।
সোমবার আবুধাবিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা পারস্য উপসাগরজুড়ে বিদ্যমান উত্তেজনাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। আগে যেখানে আমিরাতি ভূখণ্ডের কাছাকাছি এলাকাকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হতো এখন সেখানে খোদ দেশটির রাজধানীকে টার্গেটে পরিণত করা হচ্ছে। সোমবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় আবুধাবির আলদাফরা বিমান ঘাঁটিতে থাকা মার্কিন সেনারা বাংকারে আশ্রয় নিয়ে তাদের নিজস্ব প্যাট্রিয়ট মিসাইল দিয়ে পাল্টা হামলা চালায়। বছরের পর বছর ধরে বিপজ্জনক প্রতিবেশীদের মধ্যেও নিজেকে একটি নিরাপদ বাঁক হিসেবে তুলে ধরেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে এ ধরনের হামলা নিঃসন্দেহে দেশটির ব্যবসাবান্ধব, পর্যটনকেন্দ্রিক ইমেজকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement