২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউক্রেনে হামলার অজুহাত খোঁজার চক্রান্ত করছে রাশিয়া : যুক্তরাষ্ট্র

-

পূর্ব ইউক্রেনে একদল প্রশিক্ষিত বাহিনী তৈরি রেখেছে রাশিয়া। যাদের কাজ হবে ইউক্রেনে রুশভাষীদের ওপর একটি হামলার নাটক করা। এরপর ওই ‘হামলা’র অজুহাত দেখিয়েই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে পুতিনের বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কারবি।
এর আগে গত শুক্রবার এমনই একটি বিবৃতি দিয়েছেল ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারাও বলেছিল, রাশিয়ার স্পেশাল সার্ভিসের একটি দল ইউক্রেনকে ফাঁসাতে রুশ সেনাদের উসকে দেয়ার পরিকল্পনা করছে। গত বৃহস্পতিবারও দেশটির রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এমন এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সুলিভান সে দিন বলেছিলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য আছে যে, রাশিয়া একটি আগ্রাসন পরিচালনার ভিত্তি রচনা করছে। এ খেলা আমরা ২০১৪ সালেও দেখেছি।’
অবশ্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত এসব অভিযোগের পক্ষে নিশ্চিত কোনো প্রমাণ কেউ দেখাতে পারেনি।’ ইউক্রেন সীমান্তের দিকে রাশিয়ার সেনা মোতায়েনের পর দেশটির সাথে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের দফায় দফায় কূটনৈতিক বৈঠকের পরই মার্কিন গোয়েন্দারা নতুন এ অভিযোগ নিয়ে আসে।
এ দিকে শুক্রবার ইউক্রেনের বেশ ক’টি সরকারি ওয়েবসাইট সাইবার হামলার শিকার হয়েছে, যা কিনা কূটনৈতিক পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করে দিচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ইউরোপের কর্তাব্যক্তিরা। কারবি আরো বললেন, ‘রাশিয়া তাদের এই নাটকের মঞ্চায়ন করতে পারে জানুয়ারির শেষের দিকে বা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার বেলাতেও আমরা এমনটা দেখেছি।’
মার্কিন সরকার বলছে, রাশিয়ার এ আগ্রাসন শুরুর ভিত তৈরিতে কাজ করছে দেশটির নানা পক্ষ। বিশেষ করে ইউক্রেনে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হচ্ছে ও দেশটির নেতারা অতিমাত্রায় উগ্র আচরণ করছে- এমন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে ওরা। গত ডিসেম্বরে দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিদিন এ বিষয়ে পোস্ট হয়েছে গড়ে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি।
অন্য দিকে গত সপ্তাহে রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিশেষ কোনো ফল আসেনি। রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাদের এসব আলোচনা একটা ‘কানা-গলি’তে এসে ঠেকেছে। এ আলোচনা আর এগিয়ে নেয়ার মতো নয় বলেও অভিমত তার। একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও বলেছেন, কূটনৈতিক সেশনগুলোতে ‘যুদ্ধের ঢাক পেটানো’র শব্দই শোনা গেছে জোরেশোরে।
আবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ শুক্রবার বলেছেন উল্টো কথা। তার মতে, মস্কো যদি পশ্চিমাদের কথামতো না চলে তবে ইউক্রেন সীমান্তে ন্যাটোই তাদের সেনা মোতায়েন বাড়াবে। তিনি বলেন, ‘যেখানে আমাদের লক্ষ্য হলো সামরিক সঙ্ঘাত এড়ানো, সেখানে পশ্চিমারা তার উল্টোটা করছে। ন্যাটো সদস্যরা সেখানে ইউক্রেনের একেবারে সীমানা ঘেঁষে ব্ল্যাক সি বরাবর তাদের বহর বাড়িয়ে চলেছে।’
ঘটনা যা-ই ঘটুক, ইউক্রেন সরকার যে টেনশনেই আছে তাতে সন্দেহ নেই। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির জেলেনস্কি তাই তড়িঘড়ি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে একটি ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছেন। ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইউক্রিনফর্ম জানালো এ খবর। তথাপি, এ ধরনের কোনো আলোচনার বিষয়ে কোনো পক্ষ এখনো কোনো সাড়া দেয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement