২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আফগানিস্তানের জব্দ অর্থ ছাড়ের পরিকল্পনা বিশ্বব্যাংকের

মানবিক সহায়তা হিসেবে ৫০ কোটি ডলার দেয়া হতে পারে: আমিরাতে আশরাফ গনির রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা
-

আফগানিস্তানের ত্রাণ তহবিলের জব্দ করা অর্থ থেকে ৫০ কোটি ডলারের বেশি ছাড় করার একটি প্রস্তাব চূড়ান্ত করছে বিশ্বব্যাংক। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অবগত একটি সূত্র জানিয়েছে, এই অর্থ মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোকে দেয়া হবে। তবে এতে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে দেশটির হাজার হাজার সরকারি কর্মচারী। প্রস্তাবটি নিয়ে মঙ্গলবার অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বসবেন বিশ্বব্যাংক বোর্ড সদস্যরা। আফগানিস্তান রিকন্সট্রাকশন ট্রাস্ট ফান্ডের মোট ১৫০ কোটি ডলার আটকে রেখেছে বিশ্বব্যাংক। এই অর্থ অন্য কোথাও ছাড় করতে ব্যাংকটির ওপর চাপ বাড়ছে।
আফগানিস্তানের তিন কোটি ৯০ লাখ মানুষ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। শীতে খাবার সঙ্কটের পাশাপাশি দারিদ্র্য বাড়ছে। আফগান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি উন্নয়নে ওই ত্রাণ সাহায্য করবে কিন্তু বড় ধরনের গ্যাপ থেকে যাবে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ওই অর্থ কিভাবে পাবে তা স্পষ্ট নয়। এ ছাড়া সরকারি কর্মীদের ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়নি বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবে। প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে এই অর্থ মূলত যাবে আফগানিস্তানের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন মেটাতে। দেশটির সাত শতাংশেরও কম মানুষ করোনার টিকা পেয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে সহায়তা ছাড় নিয়ে আলোচনা করার কথা বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের। এর আগে আফগানিস্তানের উন্নয়নের জন্য ‘আফগানিস্তান কন্সট্রাকশন ট্রাস্ট ফান্ড’ নামের একটি তহবিল গঠন করা হয়েছিল। স্থগিত ওই তহবিলের অর্থই এবার মানবিক সহায়তা হিসেবে দেয়ার পরিকল্পনা চলছে।
সূত্র জানায়, পরিকল্পনামাফিক সব এগোলে জাতিসঙ্ঘ ও আফগানিস্তানে এ মুহূর্তে কাজ করা বিভিন্ন মানবিক সংস্থার মাধ্যমে ওই অর্থ দেয়া হবে। তবে কবে নাগাদ বিশ্বব্যাংকের সহায়তা ছাড় দেয়া হবে, তা এআরটিএফের দাতাদের ওপরই নির্ভর করছে বলে জানিয়েছে সূত্র। এ মুহূর্তে এআরটিএফের তহবিলে দাতার সংখ্যা ৩৪। আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের সহায়তা ও বেসামরিক বাজেটের ৩০ শতাংশ অর্থই মিলত তহবিলটি থেকে।
আফগানিস্তানের তালেবানের কালচারাল কমিশনের সদস্য আহমদুল্লাহ ওয়াসিক জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেয়া সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও তার সহযোগীদের দেশটিতে বসে রাজনৈতিক তৎপরতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আবুধাবি। গত রোববার এক টুইটবার্তায় এই কথা জানান তিনি। তবে আশরাফ গনি ও তার সহযোগীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। খবর তোলো নিউজ।
টুইটবার্তায় আহমদুল্লাহ ওয়াসিক বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত আশরাফ গনি প্রশাসনের সব কর্মকর্তার রাজনৈতিক তৎপরতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যারা দুবাই ও অন্য শহরগুলোতে বাস করছেন।’ এই নিষেধাজ্ঞায় আশরাফ গনি ও তার দুই সহযোগী আতা মোহাম্মদ নুর ও হামদ্ল্লুাহ মুহিবও রয়েছেন বলে টুইটবার্তায় জানান ওয়াসিক। তবে তালেবানের মুখপাত্র ইনামুল্লাহ সামানগানি বলেছেন, এই বিষয়ে তালেবান ও আমিরাতের সরকারের মধ্যে সরাসরি কোনো আলাপ হয়নি।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিশ্বের দেশগুলো অনুধাবন করতে পেরেছে যে আফগানিস্তানে কিভাবে অগ্রসর হতে হবে এবং তারা তাদের দেশে কাউকেই রাজনৈতিক তৎপরতা চালানোর অনুমতি দেবে না। কিন্তু এই বিষয়ে আমিরাত আমাদের এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।’ তবে আশরাফ গনির ভাই হাশমত গনি এই নিষেধাজ্ঞার কথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাস করা রাজনীতিবিদদের প্রতি দেশটির নীতি হচ্ছে, তারা কাউকে রাজনৈতিক তৎপরতায় যুক্ত থাকার অনুমতি দেয় না। এই ব্যবস্থা শুধু প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির জন্যই নয়। বেনজির ভুট্টো ও থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ওপরও এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল।’


আরো সংবাদ



premium cement