৪০০ বছর পর ঔপনিবেশিক শাসনমুক্ত বার্বাডোজ
রানীকে রাষ্ট্রীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হলো ক্যারিবীয় দ্বীপটি- বিবিসি ও রয়টার্স
- ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
ব্রিটেনের রানীকে আনুষ্ঠানিক সরকার প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে বিশ্বের নতুন প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বার্বাডোজ। এর মধ্য দিয়ে ক্যারিবীয় দ্বীপটিতে প্রথম ইংলিশ জাহাজ পৌঁছানোর প্রায় ৪০০ বছর পর ব্রিটেনের সাথে অবশিষ্ট ঔপনিবেশিক সম্পর্ক ছিন্ন করল দেশটি। মধ্যরাতে রাজধানী ব্রিজটাউনের চেম্বারলিন ব্রিজে সমবেত হাজার হাজার মানুষের উল্লাসের মধ্য দিয়ে নতুন রিপাবলিক বার্বাডোজ। জনাকীর্ণ হিরোস স্কয়ারে ২১ বার তোপধ্বনি এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।
ঔপনিবেশিকতার অবসানে নাচ, গান এবং বক্তব্যের পর বার্বাডোজের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন সান্দ্রা মাসুন। গত মাসে দেশটির পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে নির্বাচিত হন তিনি। বার্বাডিয়ান কবি উইনস্টোন ফারেল বলেন, ‘এই ঔপনিবেশিক চ্যাপ্টারে দাঁড়ি। এটা আমাদের গল্প, আখের ক্ষেতে উঠে আসুন, আমাদের ইতিহাস পুনরুদ্ধার করুন।’ কমলা বিক্রেতা নাইজেল মায়েরস বলেন, আমি খুশি। এখন আমরা নিজেরাই, ইংল্যান্ডের কোনো রাজা কিংবা রানী নেই।’
বার্বাডোজের সেই অনুষ্ঠানে রানী এলিজাবেথের রাজকীয় পদমর্যাদা হ্রাস এবং নতুন বার্বাডোজ ঘোষণার সময় ব্রিটিশ রাজপরিবারের উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস নীরবে দাঁড়িয়েছিলেন। বার্বাডোজের এই পদক্ষেপ ব্রিটেনের সাবেক অন্য উপনিবেশগুলোতে সার্বভৌমত্বের নতুন আলোচনা উসকে দিতে পারে। বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা একজন নারীকে সর্বসম্মতভাবে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছি। বর্তমানে তার চেয়ে যোগ্যতম কোনো প্রার্থী পাওয়া যায়নি।
ওই দ্বীপ ভূখণ্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট সান্দ্রা ম্যাসন বলেছেন, আমাদের জনগণকে অবশ্যই প্রজাতান্ত্রিক বার্বাডোজে আত্মা এবং তার উপাদান দিতে হবে। আমরা অবশ্যই এর ভবিষ্যৎ ঠিক করব। আমরা একে অন্যের জন্য এবং অন্যান্য দেশও। আমরা এখন বার্বাডোজের জনগণ। বার্বাডোজসহ ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং জ্যামাইকার মতো অন্যান্য ১৫টি দেশ ও অঞ্চলের রাষ্ট্রীয় প্রধান হিসেবে আছেন ব্রিটিশ রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের সাথে ঔপনিবেশিক ইতিহাসের সম্পর্ক ছিন্নের আনুষ্ঠানিক এই ঘটনা অন্যান্য দেশের জন্যও পথ তৈরি করতে পারে।
মায়ের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভিনন্দন বার্তা নিয়ে বার্বাডোজে হাজির হওয়া প্রিন্স চার্লস বলেছেন, ‘এই প্রজাতন্ত্রের সৃষ্টির মাধ্যমে এক নতুনের সূচনা হলো। ‘আমাদের অতীতের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিনগুলো এবং দাসত্বের ভয়াবহ নৃশংসতা যা আমাদের ইতিহাসে চিরকাল কলঙ্কিত করে। এই দ্বীপের বাসিন্দারা সেই কলঙ্ক মুছে অসাধারণ দৃঢ়তার সাথে তাদের পথ তৈরি করেছেন।’ ১৯৯২ সালে রানী এলিজাবেথকে রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেয় আরেক সাবেক উপনিবেশ মরিশাস। সেই সময় তারা নিজেদের প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা