২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লোকসভায় কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পাস

বিলের উপর বিরোধী দলের আলোচনার দাবি খারিজ সরকারপক্ষের
-

ভারতে লোকসভায় পাস হয়েছে কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল। গতকাল সোমবার সকালে হট্টগোল ও বিরোধী আইনপ্রণেতাদের প্রবল হইচইয়ের মধ্যে কণ্ঠভোটে বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের এই বিলটি পাস হয়। কৃষি আইন নিয়ে আলোচনার দাবিতে সোমবার সকালে শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই হই-হট্টগোল শুরু করেন ভারতের বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা।
একপর্যায়ে ওয়েলে নেমে এসে বিক্ষোভ দেখান তারা। ওই পরিস্থিতিতে সংসদের দুই কক্ষেই অধিবেশন দুপুর ১২টা পর্যন্ত মুলতবি করেন স্পিকার। পরে দুপুর ১২টায় অধিবেশন ফের শুরু হতেই ‘কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল, ২০২১’ পেশ করেন ভারতের কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। কণ্ঠভোটে সাথে সাথেই সেটি পাস হয়ে যায়। বিরোধীরা কৃষি আইনের ওপর আলোচনার যে দাবি করেছিল, তা খারিজ করে দেয় সরকারপক্ষ।
এ দিকে এখনো দিল্লি সীমানায় বসে রয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। সম্প্রতি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিষয়ে মৌখিক ঘোষণা দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু আন্দোলনরত কৃষকদের দাবি ছিল, পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিক প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। এই পরিস্থিতিতে সোমবারই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল রাজ্যসভায় পেশ করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন ভারতের পার্লামেন্টবিষয়ক মন্ত্রী। সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনই এ নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন বিরোধী আইনপ্রণেতারা। সরকারপক্ষ সেই দাবি না মানায় শুরু হয় হই-হট্টগোল। শেষ পর্যন্ত লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন দুপুর ১২টা পর্যন্ত মুলতবি করতে বাধ্য হন স্পিকার।
দুপুর ১২টায় অধিবেশন শুরু হতেই লোকসভায় প্রত্যাহার বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী। ধ্বনিভোটে তা পাস হয়ে যায়। বিরোধীদের আলোচনার দাবি মানেনি মোদি সরকার। উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনটি কৃষি বিলে সংশোধন করে আইনে পরিণত করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর থেকেই দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্তানে ওই আইনের বিরুদ্ধে তুমুল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়। বিশেষত, পাঞ্জাবে সেই বিক্ষোভের তীব্রতা ছিল অনেক বেশি। রাজ্যজুড়ে রাস্তা অবরোধ, রেললাইন অবরোধসহ নানা আন্দোলনের মাধ্যমে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিবাদ জানায় কৃষক সংগঠনগুলো। তাদের অভিযোগ, নতুন আইনের ফলে লোকসানের মুখে পড়বেন কৃষকরা।
কৃষকরা দাবি করেছিলেন, বিতর্কিত ওই আইনের ফলে ফসল নিয়ে তাদের দরাদরির ক্ষমতা কমে যাবে, প্রচলিত ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হবেন তারা। পাশাপাশি, বেসরকারি এবং বড় সংস্থাগুলোর কাছে কৃষিপণ্য মজুদ রাখার রাস্তাও উন্মুক্ত হবে। যদিও সে সময় মোদি সরকারের পাল্টা দাবি ছিল, নতুন কৃষি আইনে কোনোভাবেই কৃষকরা বঞ্চনার শিকার হবেন না। এমএসপি ব্যবস্থাও কার্যকর থাকবে। তবে আন্দোলনের কারণে শেষমেশ সেই বিতর্কিত আইন বাতিল করতে বাধ্য হলো দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।


আরো সংবাদ



premium cement