২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জার্মানিতে অ্যাঞ্জেলার দলকে হারিয়ে জয়ী এসডিপি

জোট সরকার গঠনের আভাস
-

জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেলের ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন অব জার্মানি (সিডিইউ) দলকে সামান্য ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছে মধ্য বামপন্থী সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসডিপি)। তবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জোট সরকার গঠনের দিকেই যেতে হবে জার্মান রাজনৈতিক দলগুলোকে। এসডিপি ইতোমধ্যে গ্রিন পার্টি ও লিবারেল পার্টির সাথে জোট গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছে।
এর আগে স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পুরো জার্মানিতে ভোট গ্রহণ করা হয়। মোট ছয় হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এবারের নির্বাচনে মোট ৪৭টি দল ছয় হাজার ২১১ জন প্রার্থী দিয়েছিল।
সোমবার সকালের হিসাব অনুযায়ী, এসডিপি মোট ২৫.৭ ভাগ ভোট পেয়েছে। অপর দিকে অ্যাঞ্জেলা মারকেলের সিডিইউ দল পেয়েছে ২৪.১ ভাগ ভোট। তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও দলগতভাবে ভোটে সবচেয়ে ভালো করেছে গ্রিন পার্টি। তারা পেয়েছে ১৪.৮ শতাংশ ভোট, যা দলটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ভোটের রেকর্ড।
১১.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে উদারপন্থী ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি)। কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জোট সরকার গঠনের দিকেই যেতে হবে জার্মান রাজনৈতিক দলগুলোকে। এসপিডি দলের নেতা ওলাফ শলৎজ অবশ্য এর আগে বলেছেন, সরকার গঠনে তার দল ভোটে স্পষ্ট রায় পেয়েছে। সমর্থকরা ব্যাপক উচ্ছ্বাসের সাথে ওলাফ শলৎজকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে। পরে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ভোটাররা একটি ‘বাস্তবধর্মী সরকার’ গঠনে তাকে দায়িত্ব দিয়েছে।
অন্য দিকে অ্যাঞ্জেলা মারকেলের সম্ভাব্য উত্তরসূরি আরমিন ল্যাশেট বলেছেন, সবচেয়ে বেশি ভোট পেলেই জয়ী হওয়া যাবে না। পুরো বিষয়টিই এখন অঙ্কের হিাসব। বুথফেরত জরিপে দুই দলই সমান ভোট পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল; কিন্তু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অপ্রত্যাশিত পূর্বাভাস আসছিল এবং এই ফলাফলই যে শেষ নয় এমন ইঙ্গিত আগেই পাওয়া যাচ্ছিল। এখন একটি জোট সরকার গঠনের চাবিকাঠি রয়েছে গ্রিন পার্টি এবং এফডিপির হাতে। দু’টি দলের কেউই আলাদা করে চমক না দেখালেও তাদের দুই দলের ভোট একসাথে করলে একটি জোট সরকার গঠনে বড় দুই দলের যে কারোর জন্য সেটি চমক হতে পারে। তবে তাদেরকে এক ছাদের নিচে আনতে পারাই এখন বড় দু’টি দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। জোট সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ছোট এই দল দু’টিই ৩০ বছর বয়সের নিচে জার্মান নাগরিকদের পছন্দ। সব মিলিয়ে এখন জটিল আকার ধারণ করেছে এই নির্বাচনের ফল। তবে এটা পরিষ্কার যে, একটি জোট সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত কোথাও যাচ্ছেন না বিদায়ী চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল।
জোট সরকার গড়তে চান ওলাফ শলৎজ
এ দিকে বিজয়ী বামপন্থী দল সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসডিপি)র চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী ওলাফ শলৎজ মনে করছেন অ্যাঞ্জেলা মারকেলের রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) আর ক্ষমতায় থাকা উচিত হবে না। নির্বাচনে এগিয়ে থেকে গতকাল সোমবার তিনি বলেন, ‘সবুজ এবং লিবারেল পার্টির সাথে জোট গঠনের সময় এসেছে’।
যদিও অ্যাঞ্জেলার ইউনিয়ন শিবিরের নেতা আরমিন ল্যাশেট এখনো পরাজয় মেনে না নেয়ায় সরকার গঠনের প্রক্রিয়া জটিল হতে পারে। সমর্থনে বিশাল ঘাটতি সত্ত্বেও অ্যাঞ্জেলার সম্ভাব্য উত্তরসূরি আরমিন ল্যাশেট এখনই সরকার গড়ার আশা ছাড়ছেন না।
ল্যাশেট মনে করেন, বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে থাকলেই জয়ী হওয়া যাবে না। পুরো বিষয়টা এখন অঙ্কের হিসাব। যাই হোক না দীর্ঘ ১৬ বছর পর নতুন কোনো সরকার পেতে যাচ্ছে জার্মানরা। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময় পর জার্মানিতে ক্ষমতা হারাতে যাচ্ছে অ্যাঞ্জেলা মারকেলের রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল