২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এশিয়া-প্যাসিফিক বাণিজ্য জোটে যোগ দেয়ার আবেদন চীনের

-

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্য জোটে যোগ দেয়ার আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার চীনবিরোধী একটি নিরাপত্তা জোট গঠনের ঘোষণা দেয়ার পরদিনই কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রোগ্রেসিভ এগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপে (সিপিটিপিপি) বেইজিংয়ের যুক্ত হওয়ার এ ইচ্ছার কথা জানা গেল।
চীন জোটটিতে যোগ দিলে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারের পথ সুগম হবে বলে ধারণা অনেক পর্যবেক্ষকের। বেইজিংয়ের প্রভাব রুখতে বারাক ওবামার আমলে যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম এই এশিয়া-প্যাসিফিক বাণিজ্য জোটের উদ্যোগ নিয়েছিল।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে এই উদ্যোগ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। পরে জাপানের নেতৃত্বে সিপিটিপিপি গঠনের আলোচনা শুরু হয়। ২০১৮ সালে ১১টি দেশ এতে স্বাক্ষর করে। এ দেশগুলোর মধ্যে জাপান ছাড়াও আছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, চিলি ও নিউজিল্যান্ড। জোটের প্রশাসনিক কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করছে নিউ জিল্যান্ড। গত বৃহস্পতিবার চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও জানান, তিনি সিপিটিপিপির মুক্তবাণিজ্য চুক্তিতে যোগ দিতে নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী ডেমিয়েন ও’কনরকে চিঠি দিয়েছেন।
এ আবেদনের পরের পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে দুই মন্ত্রী আলোচনাও করেছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের জুনে ব্রিটেন সিপিটিপিপিতে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করে; থাইল্যান্ডও এতে যোগ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চীন গত বছরের নভেম্বরে ১৪টি দেশের সাথে মিলে অন্য একটি মুক্ত বাণিজ্য জোট রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপও (আরসিইপি) করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ বাণিজ্য জোট আরসিইপিতে চীন ছাড়াও আছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
তিন দেশীয় চুক্তি ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘সংকীর্ণ মানসিকতার’ : এ দিকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ঐতিহাসিক নিরাপত্তা চুক্তির তীব্র সমালোচনা করে চীন এ চুক্তিকে ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘সংকীর্ণ মানসিকতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ওই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়াকে পরমাণু চালিত সাবমেরিন নির্মাণের প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা করবে। আর এটিকে বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে একটি উদ্যোগ বলেই মনে করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলে বহু বছর ধরেই সঙ্কট বিরাজ করছে এবং এর জেরে উত্তেজনাও রয়েছে তুঙ্গে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাঁও লিজিয়ান বলেছেন, ওই (যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার) জোট আঞ্চলিক শান্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে জোরদার করছে। তিনি দেশ তিনটির তীব্র সমালোচনা করে ‘স্নায়ু যুদ্ধ মানসিকতা’ আখ্যায়িত করেছেন এবং সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দেশ তিনটি তাদের নিজেদের স্বার্থেরও ক্ষতি করছে।


আরো সংবাদ



premium cement