২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রাশিয়ায় পার্লামেন্ট নির্বাচন শুরু

ক্ষমতাসীন দলেরই জয়ের আশা
-

ক্রেমলিনের সমালোচকদের কয়েক বছর ধরে দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগের মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার শুরু হলো রাশিয়ার তিন দিনের পার্লামেন্ট নির্বাচন। সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয়তা খানিকটা নামতে দেখা গেলেও এবারো জয়ের আশা দেশটির ক্ষমতাসীন দল ইউনাইটেড রাশিয়ার।
পার্লামেন্ট ও স্থানীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ার ১১টি টাইম জোনের বিস্তৃত অঞ্চলে। মস্কোর বাসিন্দারা যখন ঘুমাতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন পূর্বাঞ্চলের চুকুতখা ও কামচাটকা এলাকার লোকেরা ছুটছেন ভোটকেন্দ্রে।
এবারের নির্বাচনে ১৪টি দল অংশ নিচ্ছে। আগামীকাল রোববার পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। দেশটির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান ইলা পামফিলোভা ভোটারদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, চলুন ভোট দিতে যাই। বিরোধীদের দমন-পীড়নের কঠোর সমালোচনা থাকলেও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থক দল ইউনাইটেড রাশিয়ার পার্লামেন্টে প্রভাব কমে যাওয়ার কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না এবারের নির্বাচনে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার এক ভিডিওবার্তায় রাশিয়ানদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ৪৫০ আসনের পার্লামেন্ট দুমায় এখন ইউনাইটেড রাশিয়ার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিদ্যমান। ফলে এর আগে প্রেসিডেন্ট পুতিন সংবিধান সংশোধনের বড় সুযোগ পান তাদের সমর্থন পেয়ে। সংবিধানে সংশোধনী আনার ফলে পুতিনের ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর বাধা দূর হয় এবং ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার পথ পরিষ্কার হয়।
১৯৯৯ সাল থেকে রাশিয়ার ক্ষমতার আসনে ভ্লাদিমির পুতিন। তবে ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কিনা, তা এখনো প্রকাশ করেননি। তবে এবার করোনা মহামারী ও মূল্যস্ফীতির কারণে জনগণের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা এবং বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি ও তার সমর্থকদের দমন-পীড়নের প্রতিবাদে মস্কোতে বিক্ষোভ করেন কয়েক হাজার মানুষ।
জনপ্রিয়তা খানিকটা কমলেও দেশের ভেতর তার শাসনের সবচেয়ে বড় সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি ও তার সমর্থকদের রাশিয়ার রাজনীতিতে অবস্থান বেশ দুর্বল। নাভালনির সহকর্মীরা এবারের নির্বাচনকে ‘ধোঁকাবাজি’ অ্যাখ্যা দিয়ে পুতিনপন্থী ইউনাইটেড রাশিয়ার প্রার্থীদের হারাতে যেখানে যে প্রার্থী সক্ষম তাকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে ইউনাইটেড রাশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা হচ্ছে ৭৭ বছর বয়সী গেন্নাদি জুগানভ নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টিকে; এরপরই আছে ৭৫ বছর বয়সী জাতীয়তাবাদী ভ্লাদিমির জিরিনভস্কির লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অব রাশিয়া। ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ এই দুটি দল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেই পুতিনকে সমর্থন দিয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারী ও মূল্যস্ফীতির কারণে সৃষ্ট হতাশা এবং কয়েক বছর ধরে বেতনভাতা কমে যাওয়া কিংবা একই জায়গায় স্থির থাকায় পুতিন ও ইউনাইটেড রাশিয়ার জনপ্রিয়তা সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা নেমেছে বলে রাষ্ট্র পরিচালিত বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে। এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হলেও ইউনাইটেড রাশিয়ার ‘অ্যাপ্রুভাল রেটিং’ ২০০৬ সালের পর এখনই সবচেয়ে কম, অন্যদিকে বেড়েছে কমিউনিস্ট পার্টির জনপ্রিয়তা।
পুতিন সম্প্রতি পুলিশ কর্মকর্তা, সেনাসদস্য ও পেনশনগ্রহীতাদের জন্য এককালীন কিছু অর্থ বা বেতন বাড়ানোর প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন। ইউনাইটেড রাশিয়ার ভোট বাড়ানোর লক্ষ্যেই এমনটা করা হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement