২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিয়ানমারে জান্তার প্রধানমন্ত্রিত্ব দখলের নিন্দা ছায়া সরকারের

-

মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার এবং জরুরি অবস্থা ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর যে ঘোষণা দিয়েছেন, তার নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির জান্তাবিরোধীদের নিয়ে গঠিত ছায়া সরকারের সদস্যরা। ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট হিসেবে পরিচয় দেয়া এই সরকার এটিকে জান্তা সরকারের বৈধতা লাভের চেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন।
অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের ছয় মান পরে রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা করেন মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। এই সময় তিনি মিয়ানমারে ‘স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বহুদলীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। ভাষণে জেনারেল হ্লাইং আবার গত নভেম্বরের বেসামরিক সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করেন।
নিজেদের এখন স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল পরিচয় দেয়া সরকার রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, মিন অং হ্লাইংকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের (কেয়ারটেকার সরকার) প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে। ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী অং মিয়ো মিন বলেছেন, সামরিক পরিষদ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে উত্তরণ থেকে প্রতীয়মান হয়, তারা নিজেদেরকে একটি সরকার হিসেবে প্রমাণের চেষ্টায় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এটা অস্বীকার করা যাবে না যে, এই সামরিক সরকার জনগণের নির্বাচিত নয়।
নভেম্বরের নির্বাচনে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির নেতৃত্বের ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) জয়ের পর দেশটির সামরিক বাহিনী তাতমাদাও তা প্রত্যাখ্যান করে। বেসামরিক সরকারের সাথে সামরিক বাহিনীর নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের জেরে ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়। মিয়ানমারের অবস্থা পর্যবেক্ষণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে অন্তত ৯৪০ জন নিহত হয়েছেন। তাছাড়া বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ৬ হাজার ৯৯৪ জন। বর্তমানে বন্দী রয়েছেন ৫ হাজার ৪৪৪ জন। এ ছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আরো এক হাজার ৯৬৪ জনের নামে।


আরো সংবাদ



premium cement