আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে সহায়তায় প্রস্তুত চীন
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ তালেবান প্রতিনিধিদলের; আফগান সেনাদের কাছে ৭ সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র- রয়টার্স ও এএফপি
- ২৯ জুলাই ২০২১, ০০:০০, আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২১, ০৯:৫৩
আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। সফররত আফগান তালেবানের প্রতিনিধিদলকে এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তালেবানের মুখপাত্র মুহাম্মদ নাইম এ কথা জানিয়েছেন। চীনে দুই দিনের সফরে থাকা তালেবানের ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সাথে সাক্ষাৎ করেছে। দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে শান্তিপ্রক্রিয়া ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। গতকাল বুধবার তালেবানের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এ বৈঠক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে পোস্ট করেছেন তালেবানের মুখপাত্র মুহাম্মদ নাইম। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের বর্তমান অবস্থা, শান্তিপ্রক্রিয়া এবং দুই দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। চীনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণেই তালেবান এই সফর করেছে বলে জানান মুহাম্মদ নাঈম।
সফরে তারা বেইজিংকে এই নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, কোনো দেশের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে আফগান মাটি ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র মোহাম্মদ নাঈম এএফপিকে জানান, তালেবান প্রতিনিধিদল চীনকে এই মর্মে আশ্বস্ত করেছে যে, আফগানিস্তানের মাটি কখনো কোনো দেশে নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হবে না। এর বিপরীতে চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কখনো হস্তক্ষেপ করবে না বরং সঙ্কট সমাধান এবং দেশটিতে শান্তি আনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন তালেবান মধ্যস্থতাকারী ও এর উপনেতা মোল্লা বারাদার আখুন্দ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও দলটি আফগানিস্তান বিষয়ক চীনের বিশেষ দূতের সাথে আলোচনা করেছে। চীনের উত্তরাঞ্চলের তিয়ানজিন শহরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে তালেবান প্রতিনিধিদলের দেখা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেইজিংয়ের এক সরকারি মুখপাত্রও। শুধু চীন নয়, নিজেদের ভিত্তি আরো শক্ত করতে নানা পক্ষের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান। সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর কাতারে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যালয়ও রয়েছে। শান্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে সেখানে বহুবার আলোচনা করেছে তালেবান। চলতি মাসেই ইরানে আফগান সরকারের প্রতিনিধিদলের সাথে আলোচনায় বসার কথা আছে তালেবানের।
৭ সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর যুক্তরাষ্ট্রের
এ দিকে পিটিআইয়ের এক খবরে বলা হয়েছে, সেনা প্রত্যাহারের শেষ পর্যায়ে এসে আফগান সেনাবাহিনীর কাছে সাতটি সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানে দুই দশক ধরে চলা অভিযান শেষ করতে যাচ্ছে দেশটি। এর জের ধরে সেখান থেকে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে মার্কিন সেনাসদস্য ও যুদ্ধ সরঞ্জামগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের (সেন্টকম) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে সাতটি সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর করেছে। দেশটি থেকে ৯৫ শতাংশ মার্কিন সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম এর মধ্যেই সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আফগানিস্তান থেকে সি-১৭ পরিবহন উড়োজাহাজ ৯৮৪ বার বোঝাই করে নানা সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেছে। এ ছাড়া ১৭ হাজার ৭৪টি সরঞ্জাম ফিরিয়ে নেয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সরবরাহ সংস্থার কাছে নেয়া হয়েছে। অভিযান শেষ হলেও আফগানিস্তানে কমবেশি ৬৫০ জন মার্কিন সেনা অবস্থান করবে। দেশটিতে অবস্থানরত মার্কিন কূটনীতিকদের নিরাপত্তা এবং কাবুল বিমানবন্দরের প্রতিরক্ষার জন্য তাদের জরুরি ভিত্তিতে সেখানে মোতায়েন রাখা হচ্ছে।
চলতি বছরের ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্ত ধাপে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেনা সরিয়ে নেয়ার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে আফগানিস্তানে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে তালেবানরা। এতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানিও বাড়ে। এ হামলা ঠেকাতে আফগানিস্তানে মার্কিন বিমান হামলা চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা