শিগগিরই পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরছে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান
মার্কিন কর্মকর্তারা আশাবাদী হলেও ইরান বলছে, এখনো অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে- নিউ ইয়র্ক টাইমস
- ১০ মে ২০২১, ০১:৪৬
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইরানের সাথে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইরানের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই এ চুক্তি হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে ভিয়েনায় চুক্তিটি নিয়ে আলোচনা চলছে।
২০১৮ সালে ইরানের সাথে বিশ্ব শক্তিগুলোর পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তিটির শর্ত আরো কঠোর করতে চেয়েছিলেন তিনি। তার প্রস্তাবিত শর্ত অনুসারে, পারমাণবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক কার্যক্রমও সীমিত হয়ে যেত। তবে ইরান ওই শর্তে রাজি না হওয়ায়, চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ট্রাম্প। তবে সে চাপ অগ্রাহ্য করে পারমাণবিক কার্যক্রম আরো জোরদার করে ইরান। এ দিকে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইরানের সাথে ফের পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম সীমিত করতে এবং ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনে তাদের প্রক্সি শক্তিগুলোর প্রতি সমর্থন কমাতে একটি ‘দীর্ঘমেয়াদি ও জোরদার’ চুক্তি করার কথা জানান তিনি।
বাইডেন প্রশাসন ইরানের সাথে নতুন যে চুক্তি করতে ইচ্ছুক তা ২০১৫ সালের চুক্তির আদলেই তৈরি হতে পারে। নাম প্রকাশ না করে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, দুই দেশকে ঠিক করতে হবে তারা আগের চুক্তিটির কোন কোন শর্ত মেনে চলবে। তবে কোনো বিশেষ শর্তের কথা আলাদা করে উল্লেখ করেননি ওই কর্মকর্তা। এ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা নতুন চুক্তি নিয়ে আশাবাদী হলেও ইরানের আলোচকরা জানিয়েছেন, এখনো অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বৃহস্পতিবার বলেন, আমরা চুক্তিতে কোন পথ অনুসরণ করব তা নিয়ে একমত। তবে এখনো কিছু গুরুতর প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। আমাদের সামনে এখনো দীর্ঘ পথ বাকি। চুক্তি কবে নাগাদ হতে পারে তার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা অনুমান করা অসম্ভব। বিদ্যমান সমস্যাগুলো অত্যন্ত গুরুতর। সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করতে হবে। ইরানি গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের সাথে চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বড় অমীমাংসিত বিষয়গুলোর একটি হচ্ছে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণের গতিবৃদ্ধির জন্য ইরানের উন্নত সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন করা। গত মাসে সেন্ট্রিফিউজগুলো স্থাপন করে দেশটি। মার্কিন আলোচকরা চাইছেন ইরান এসব সেন্ট্রিফিউজ ধ্বংস করে দিক। কিন্তু ইরান সেগুলো সরাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা সেন্ট্রিফিউজগুলো কার্যকর রাখার পক্ষপাতী। তবে তারা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণের ওপর নজর রাখার অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছে।
এ ছাড়া রেভুলিউশনারি গার্ডস কর্পসকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে সরিয়ে নিতেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা পূর্বে জানিয়েছে, ২০১৫ সালের চুক্তির বাইরে থাকা কোনো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে না। রেভুলিউশনারি গার্ড কর্পসকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করা হয় ২০১৯ সালে। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তি সই হতে পারে। বর্তমানে ইরানে বন্দী রয়েছেন পাঁচজন মার্কিন নাগরিক। এর মধ্যে একজন হলেন এফবিআইয়ের সাবেক একজন কর্মকর্তা। ইরান তাদের মুক্তির বিনিময়ে নিজ দেশের নাগরিকদের মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি চায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা