ভারতের সমুদ্রসীমায় বিনা অনুমতিতে মার্কিন নৌবহর, দিল্লির উদ্বেগ
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ দিল্লির, নাকচ ওয়াশিংটনের- এনডিটিভি
- ১১ এপ্রিল ২০২১, ০১:০১
পূর্ব অনুমতি না নিয়ে ভারতের সমুদ্রসীমার স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক এলাকায় (এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন-ইইজেড) মার্কিন নৌবাহিনীর রণতরী প্রবেশ করায় উদ্বেগ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। শুক্রবার এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন লঙ্ঘন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী। মার্কিন নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে অবশ্য এ অভিযোগ নাকচ করে বলা হয়েছে, যথাযথভাবে আইন মেনেই জাহাজ পরিচালনা করছে নৌবাহিনী।
পারস্য উপসাগর থেকে মালাক্কার দিকে রওনা হওয়া মার্কিন নৌবাহিনীর সপ্তম নৌবহরের রণতরী ইউএসএস জন পল জনস সম্প্রতি ভারতের লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি অবস্থান নেয়। সাগরের যে এলাকায় বর্তমানে জাহাজটি রয়েছে তা ভারতের ইইজেডের অন্তর্ভুক্ত দাবি করে শুক্রবারের বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘জাতিসঙ্ঘের সমুদ্র আইনে কোনো দেশের অনুমতি ছাড়া তার স্বতন্ত্র সমুদ্রসীমার ভেতরে অন্য দেশের কোনো প্রকার সামরিক তৎপরতার অধিকার স্বীকৃত নয়; বিশেষ করে সামরিক তৎপরতার মধ্যে যদি অস্ত্র ও গোলাবারুদ সম্পৃক্ত থাকে।’
‘পারস্য উপসাগর থেকে মালাক্কার পথে থাকা ইউএসএস জন পল জনসের গতিবিধি আমাদের সার্বক্ষণিক নজরে আছে। বর্তামানে জাহাজটি যে এলাকায় রয়েছে, সেটি লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের কাছে এবং ভারতের সমুদ্রসীমার স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক এলাকার অন্তর্ভুক্ত। পূর্ব অনুমতি না নিয়ে ইইজেডে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সমৃদ্ধ রণতরী প্রবেশ করায় উদ্বেগে আছে ভারত সরকার এবং বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে আহ্বান জানানো হচ্ছে।’ গত ৭ এপ্রিল মার্কিন নৌবাহিনীর সপ্তম নৌবহরের জনসংযোগ বিভাগ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘৭ এপ্রিল, স্থানীয় সময় রাত ৮টা ২১ মিনিটে সপ্তম নৌবহরের রণতরী ইউএসএস জন পল জনস ভারতের লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের ১৩০ নটিক্যাল মাইল পশ্চিমে প্রবেশ করেছে। এই এলাকাটি ভারতের সমুদ্রসীমার স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। যদিও এ ব্যাপারে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ব অনুমতি নেয়া হয়নি, কিন্তু আন্তর্জাতিক নৌ পরিচালনাসংক্রান্ত অধিকার ও নিয়মকানুন সম্পূর্ণ মেনেই রণতরী পরিচালনা করা হচ্ছে। ভারতের সমুদ্রসীমা কর্তৃপক্ষ যদিও এ ব্যাপারে সরকারি অনুমতি দাবি করছে, কিন্তু তারা আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন লঙ্ঘনের যে অভিযোগ তুলেছে, তা সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’
যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আমরা বরাবরই নৌপরিচালনার ক্ষেত্রে মুক্ততা নীতির (ফ্রিডম অব নেভিগেশন অপারেশন্স-এফএনওপিএস) পক্ষে। অতীতেও তাই ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও তাই থাকব। এফএনওপিএস অনেক দেশেই স্বীকৃত এবং এর সাথে রাজনীতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আন্তর্জাতিক আইনেও এটি স্বীকৃত।’ ভারতের নৌবাহিনীর সাথে এ ব্যাপরে কোনো সমঝোতা হয়েছে কি নাÑ জানতে যুক্তরাষ্ট্রে নৌবাহিনীর মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগ করেছিল এনডিটিভি।
তিনি বলেছেন, ‘যা ই হচ্ছে, আন্তর্জাতিক আইন মেনেই হচ্ছে।’ ভারতের ঘনিষ্ঠতম সামরিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসন নীতির বিরুদ্ধে উভয় দেশের স্পষ্ট অবস্থান থাকায় গত এক বছরে এই সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর সাম্প্রতিক বিবৃতি চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে নয়াদিল্লিকে। গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে প্রকাশ পেয়েছে সেটিই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা