২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

লিবিয়ার পার্লামেন্টে অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার তালিকা পেশ

পার্লামেন্টে মন্ত্রিসভার তালিকা পেশ করছেন আবদুল হামিদ আল দাবিবাহ : এএফপি -

লিবিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহ তার মন্ত্রিসভার প্রস্তাবিত এক তালিকা পার্লামেন্টে অনুমোদনের জন্য পেশ করেছেন। এর মাধ্যমে ২০১১ সালে একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে অপসারণের পর দ্বিধাবিভক্ত লিবিয়ায় ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন এক পদক্ষেপ নেয়া হলো।
গত বৃহস্পতিবার লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দফতর এক বিবৃতিতে জানায়, ‘রাজনৈতিক সমঝোতার পরিকল্পনা অনুসারে, (প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহ) নির্বাচিত পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে তার মন্ত্রিসভার প্রস্তাবিত তালিকা হস্তান্তর করেন।’
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে লিবিয়ার বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে এক আলোচনার পর আল-দাবিবাহকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভায় কারা আছেন, তা প্রকাশিত না হলেও লিবিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই সরকারের মধ্যে সমান ব্যবধানে অবস্থিত উপকূলীয় শহর সিরতে আগামী সোমবার পার্লামেন্টের সদস্যরা একত্রিত হয়ে এই তালিকা অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
জাতিসঙ্ঘের পরিকল্পনার অধীনে, লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রীর আগামী ১৯ মার্চ পর্যন্ত তার মন্ত্রিসভাকে অনুমোদন করিয়ে নেয়ার সময় আছে। অন্তর্বর্তীকালীন এই মন্ত্রিসভার অনুমোদন করা হলে তা ত্রিপোলিভিত্তিক জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত ফায়েজ আল-সাররাজের গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকোর্ড (জিএনএ) সরকার ও পূর্বাঞ্চলীয় যুদ্ধবাজ নেতা জেনারেল খলিফা হাফতারের প্রশাসনের স্থানে প্রতিস্থাপিত হবে। পার্লামেন্টের অনুমোদনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই মন্ত্রিসভার অধীনেই বছরের শেষে ২৪ ডিসেম্বর নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জ্বালানি তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় ২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষ চার দশক দেশটি শাসন করা একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। গাদ্দাফি সামরিক পন্থায় বিক্ষোভকারীদের দমন করতে চাইলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধের এক পর্যায়ে বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফি নিহত হলেও দেশটিতে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ থেকে নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৪ থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে দেশটি ত্রিপোলিকেন্দ্রিক পশ্চিম ও তবরুককেন্দ্রিক পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
গত বছরের অক্টোবরে জাতিসঙ্ঘ উভয়পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত করে এবং দেশটির সংকট সমাধানে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা করে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ সংলাপের পর সুইজারল্যান্ডে বিবাদমান পক্ষগুলো দেশটিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সম্মত হয়। অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকার বছরের শেষে ২৪ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী গণতান্ত্রিক সরকার গঠনে সাহায্য করবে। জেনারেল খলিফা হাফতার অন্তর্বর্তী সরকারে তার সমর্থন জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement