মিয়ানমারে নভেম্বরের নির্বাচনের ফল অবৈধ ঘোষণা
জেনারেলদের ওপর ব্রিটেনের নিষেধাজ্ঞা- ইরাবতী ও আলজাজিরা
- ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০
মিয়ানমারের ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশনের চেয়ারম্যান থেইন সোয়ে দেশটির নভেম্বরের নির্বাচনের ফল অবৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। গত নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে নিয়োগ দিয়েছিল। তিনি গতকাল শুক্রবার ওই নির্বাচনের ফল অবৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার পর শুক্রবার রাজধানী নেপিদোতে মিয়ানমারের ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশনের চেয়ারম্যান থেইন সোয়ে নভেম্বরের নির্বাচনের ফলকে অবৈধ বলে ঘোষণা দেন। গত এক ফেব্রুয়ারি অং সান সু চিসহ নির্বাচিত নেতাদের বন্দী করে মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী জেনারেলদের ওপর ব্রিটেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কয়েক ঘণ্টার মাথায় নির্বাচন কমিশনের প্রধান থেইন সোয়ে নির্বাচনের ফল অবৈধ ঘোষণার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন।
দেশটির সাধারণ মানুষ নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দেয়ার দাবিতে আরো ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ শুরুর মধ্যেই জান্তা সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিলো। গত নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। দেশটির সাধারণ মানুষ নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দেয়ার দাবিতে আরো ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ শুরুর মধ্যেই জান্তা সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিলো। এমন সিদ্ধান্তের ফলে দেশটিতে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ আরো বাড়বে। এ দিকে দেশটিতে চলমান বিক্ষোভ দমনে আবারো চড়াও হয়েছে দেশটির সামরিক সরকার। শুক্রবার মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে। বিক্ষোভ দমনের জন্য সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে সামরিক কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে বলে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বিক্ষোভের অন্যতম মূলকেন্দ্র হ্লেদান ডিস্টিক্টে গতকাল শুক্রবারও বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ। এ সময় বিক্ষোভস্থল থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে। শত শত বিক্ষোভকারী ইয়াঙ্গুনের নাটমাক সড়কের পাশে জাতিসঙ্ঘ কার্যালয়ের কাছেও জড়ো হচ্ছে। পুলিশ অবশ্য তা অবরোধ করে রেখেছে। ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ চলাকালীন জাপানের ফটো সাংবাদিক ইউকি কিতাজিউমকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। সাংবাদিক আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মিয়ানমারে জাপানের দূতাবাস। সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, অন্যান্য বিক্ষোভকারীদেরও আটক করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
জেনারেলদের ওপর ব্রিটেনের নিষেধাজ্ঞা
এ দিকে সেনা অভ্যুত্থানে যুক্ত মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্রিটেন। নতুন এই পদক্ষেপের আওতায় সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ছাড়াও রয়েছেন সেনা সরকার গঠিত স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের আরো পাঁচ সদস্য। এ ছাড়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো আর ব্যবসা করবে না বলেও জানানো হয়েছে। মিয়ানমারে বিক্ষোভের মধ্যে সেনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ছাড়াও দেশটির সাথে সব ধরনের বাণিজ্য আবারো পর্যালোচনা করে দেখার ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজকের প্যাকেজ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের সেনা শাসকদের পরিষ্কার বার্তা দেয়া হয়েছে যে যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনে দায়ী তাদের জবাবদিহি করতে হবে আর মিয়ানমারের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে সরকারি দায়িত্ব অবশ্যই হস্তান্তর করতে হবে।’ ব্রিটেনের নতুন এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে। এর আওতায় পড়া ব্যক্তিরা ব্রিটেন সফরের অনুমতি পাবেন না আর দেশটিতে থাকা তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে। এ ছাড়া ব্রিটেনের কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে বাণিজ্যও করতে পারবেন না তারা। এর আগে মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একই ধরনের পদক্ষেপ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা