২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিরোধ নিরসনে তুরস্ক-গ্রিস আলোচনা শুরু

-

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধান নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব নিরসন এবং সমুদ্রসীমা নির্ধারণের লক্ষ্যে তুরস্ক ও গ্রিস আলোচনা শুরু করেছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে গতকাল সোমবার আলোচনা শুরু হয়। দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা দ্বন্দ্ব অবসানের লক্ষ্যে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মওলুদ কাভুসওগলু সরাসরি আলোচনায় বসার জন্য গ্রিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত সপ্তাহে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সে সময় গ্রিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানান কাভুসওগলু। পাঁচ বছর পর দুই দেশ এ ধরনের আলোচনায় বসল। ২০১৬ সালে দু’পক্ষ সর্বশেষ আলোচনা করেছিল।
তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যকার এই আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। তিনি বলেছেন, দুই দেশের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসনের এই উদ্যোগকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বাগত জানায়। এই বিষয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায় থেকেই ইতিবাচক মনোভাবের আভাস পাওয়া গেছে। যেমন, গ্রিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোস ডেনডিয়াস দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে, বৈঠক নিয়ে অ্যাথেন্সের দিক থেকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কথা নিশ্চিত করেছেন। তার আশা তুরস্কও একই মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসবে। অন্য দিকে বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমানায় গ্যাস অনুসন্ধান থামিয়ে আলোচনার পথটি প্রশস্ত করেছে তুরস্কও। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ইউরোপীয় নেতারা সামনের দিনে তুরস্ক সফরে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে।
অবশ্য দুই পক্ষ থেকে যতই রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রকাশ পাক না কেন শরণার্থী, মানবাধিকার, সমুদ্রসীমানা ও বিভিন্ন জায়গায় সামরিক হস্তক্ষেপসহ বিস্তর দ্বন্দ্ব নিরসন একেবারে সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কূটনীতিকরাও মনে করছেন শুধু কথায় নয় সম্পর্কোন্নয়নে তুরস্ককে বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমা থেকে জরিপ জাহাজ সরিয়ে নেয়াসহ আরো কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে, যে কারণে আঙ্কারার ওপর অবরোধ আরোপের ব্যাপারে ইউরোপের কয়কেটি দেশের ওপর চাপও রয়েছে। এসব বিষয়ে আগামী মার্চে ইউরোপীয় নেতাদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
তুরস্ক-গ্রিসের বৈঠক নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল একটি ‘সম্ভাবনার দ্বার’ দেখতে পাচ্ছেন। যদিও এ জন্য আঙ্কারাকে ‘বিরোধের পথ’ এড়িয়ে আলোচনার পথে হাঁটতে হবে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তিনি।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মওলুদ কাভুসওগলু এটিকে আঙ্কারা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ‘ইতিবাচক পরিবেশ’ বজায় রাখার মিশন হিসেবে অভিহিত করেছেন। আগামী দুই মাসের মধ্যে নিয়ইয়র্কে ভূমধ্যসাগরে সমুদ্রসীমানা নিয়ে বিরোধ থাকা সাইপ্রাসের সাথেও বৈঠক হবে বলে শুক্রবার জানান তিনি।
তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের মনোভাব পরিবর্তনের পেছনে অর্থনৈতিক কারণও দেখছেন অনেকে। কোভিডের কারণে দেশটির অর্থনীতি মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। তার ওপর আন্তর্জাতিকভাবে নানা টানাপড়েনও সেখানে প্রভাব ফেলছে। বাণিজ্যিক কারণেও তাই সবচেয়ে বড় অংশীদার ইউরোপের সাথে দেশটির সম্পর্ক ভালো রাখা দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement