১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে ৩৫ জনের মৃত্যু

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ইন্দোনেশিয়ার সুলাবেসি দ্বীপের একটি ভবন : এএফপি -

ইন্দোনেশিয়ায় ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পে একটি হাসপাতাল, দু’টি হোটেলসহ বেশ কিছু ভবন ধসে পড়েছে। এতে কমপক্ষে ৩৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। তবে বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন অনেকে। তাদেরকে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়া পশ্চিম সুলাওয়েসিভিত্তিক দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা জানিয়েছে, এরই মধ্যে ভূমিকম্পে ৩৫ জনের প্রাণহানির ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে তারা। ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাত ১টা অর্থাৎ গতকাল শুক্রবার প্রথম প্রহরে সুলাবেসি দ্বীপে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ছিল ৬.২। সাত সেকেন্ড স্থায়ী এ ভূমিকম্পে বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আতঙ্কিত মানুষ বেরিয়ে এসে খোলা যায়গায় অবস্থান নেয়।
কম্পনের উৎসস্থল ম্যাজিন শহরের উত্তরপূর্বে ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার গভীরে। এই কম্পনের ২৪ ঘণ্টা আগেও ওই দ্বীপে ৫.৯ মাত্রায় কম্পন অনুভূত হয়েছিল। ভূমিকম্প ও আফটার শকের কারণে তিনটি ভূমিধস হয়েছে। এর কারণে মাকাসার শহরের মতো আঞ্চলিক হাবগুলো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, সেখানে যাওয়ার সেতুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পে ৬০টি আবাসিক ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া দু’টি হোটেল, প্রাদেশিক গভর্নরের অফিস, শপিং মলেরও ক্ষতি হয়েছে। ভূমিকম্পের জেরে মামুজুতে ভেঙে পড়েছে হাসপাতাল। ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়েছেন রোগী, চিকিৎসক, নার্স সবাই।
মামুজু শহরের একটি উদ্ধারকারী সংস্থার সদস্য আরিয়ান্তো বলেন, ‘হাসপাতাল ধসে গেছে, বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে এটি। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছে রোগী ও হাসপাতাল কর্মীরা। আমরা এখন তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।’ তবে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ চাপা পড়েছেন তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থার প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী মাজেনিতে ৬৩৭ জন আহত হয়েছেন। আর মামুজু শহরে আহতের সংখ্যা ২৪ জন। এখনো কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি। তবে ইন্দোনেশিয়ার মিটিওরোলজি অ্যান্ড জিওফিজিক্স এজেন্সি (বিএমকেজি)-এর প্রধান দোয়িকোরিতা কারনাওয়াতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আরো আফটার শক হতে পারে। আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়ে সুনামির আশঙ্কাও রয়েছে। তিনি জানান, এরই মধ্যে অন্তত ২৬টি আফটার শক অনুভূত হয়েছে। কারনাওয়াতি বলেন,‘প্রথম কথা হলো সুনামি কখন হবে তার জন্য অপেক্ষা করে থাকা যাবে না। এটি খুব দ্রুতই ঘটে যায়।’
প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অফ ফায়ারে অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়া ভূমিকম্প প্রবণ। ভূমিকম্প ছাড়াও সেখানে অগ্ন্যুৎপাতও হয় মাঝে মধ্যেই। ২০১৮ সালে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পের পরেই সুনামি হয়েছিল সুলাওয়েসির পালুতে। কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সেই সময়। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৯.১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ায়। সেই সময় সুনামির জেরে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় এক লাখ সত্তর হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা, ভারত, থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশের মোট দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।


আরো সংবাদ



premium cement