২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লেবাননে অব্যাহত বিক্ষোভে অস্থিরতায় সরকার

৪ মন্ত্রীসহ ৯ এমপির পদত্যাগ, নিহতের সংখ্যা ২২০
বৈরুতে পার্লামেন্টের প্রবেশপথে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ : এএফপি -

লেবাননে ক্রমেই বাড়ছে বিক্ষোভের উত্তাপ। রাস্তায় রাস্তায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়াচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। দেশের ভেতর থেকেই প্রকাশ্যে বিদেশী হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হচ্ছে। এমন আহ্বানে সমর্থন দিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের ভেতরেই অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন ৯ জন এমপি এবং দু’জন প্রভাবশালী মন্ত্রী।
পদত্যাগ শুধু এমপি-মন্ত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সরকারি কর্মকর্তা এমনকি রাষ্ট্রদূতের মতো স্পর্শকাতর দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদেরও পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। স্পষ্টতই সবাই মেনে নিচ্ছে যে, বর্তমান সরকার মানুষকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
একজন একজন করে পদত্যাগ করার চেয়ে গণহারে মন্ত্রীদের পদত্যাগের বিষয়ে গতকাল সোমবার মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক বসার কথা। এর ফলে আলোচনা জোরালো হয়েছে। জল্পনা চলছে, তবে কি সরকারের সত্যি পতন হচ্ছে! যদি সরকারের পতন ঘটে, তা হলে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
পার্লামেন্টের স্পিকার নাবি বেরি রোববার ঘোষণা করেছেন, যে অপরাধ রাজধানী এবং জনগণকে দুর্দশায় ফেলেছে তা নিয়ে সরকারের সাথে আলোচনার জন্য পার্লামেন্টের একটি অধিবেশন বসবে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফিউচার পার্লামেন্টারি ব্লকের সদস্য ড. আসেম আরাজি বলেছেন, বর্তমান সরকারের পতন ঘটলে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই প্রেসিডেন্টের কাছে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়া নিয়ে পার্লামেন্টারি আলোচনা আহ্বান করার ক্ষেত্রে তার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তিনি আরো বলেন, আগের সরকারের সময়ও এই একই ঘটনা ঘটেছে। এতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দৃশ্যত এমন পার্লামেন্টারি আলোচনা দ্রুতই বসবে। কারণ আমরা বিশাল এক সমস্যার মুখোমুখি। অবহেলা থেকে একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এটি মানবতার জন্য বিশাল এক ট্র্যাজেডি। এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক তদন্ত।
এ দিকে বৈরুত বিস্ফোরণের তথ্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত দলকে ৬ দিনের সময় বেঁধে নিয়েছে রাষ্ট্র। কিন্তু স্থানীয় এ তদন্তের ওপর আস্থা নেই লেবাননিদের। তারা আন্তর্জাতিক তদন্ত আহ্বান করেছেন। তা ছাড়া ম্যারোনাইট প্যাট্রিআর্চ আল রাহি বিস্ফোরণের পর তার প্রথম ধর্মোপদেশে ওই বিস্ফোরণকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিস্ফোরণের মূল তথ্য উদঘাটনের জন্য তিনি এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক তদন্ত আহ্বান করেছেন। তিনি বলেছেন, এই গণহত্যা, বিপর্যয়ের জন্য দায়ী প্রতিজনের বিরুদ্ধে বাধ্যতামূলকভাবে বিচার করতে হবে। তবে আন্তর্জাতিক তদন্তের যেকোনো আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রেসিডেন্ট মিশেল আওন। তিনি উল্টো স্থানীয় তদন্তের ওপর আস্থা রেখেছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement