১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভুল ও অবহেলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ফুঁসছে লেবানন

সন্দেহভাজন কর্মকর্তারা গৃহবন্দী
বৈরুতের মার মিকাইল এলাকায় বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত নিজের দোকানের সামনে বসে আছেন আহত এক নারী : এএফপি -

বিস্ফোরণের প্রায় দুই দিন পার হলেও এখনো বৈরুতের বুকে দগদগ করছে আঘাতের চিহ্ন। এখনো নিখোঁজ অনেকে, ধ্বংসস্তূপে নিচে আটকা পড়ার সম্ভাবনায় হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন উদ্ধারকারীরা। কিসের ভুলে, কার অবহেলায় এত বড় বিপর্যয় তার জবাব চেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে লেবাননবাসী।
বৈরুত বন্দরে গত মঙ্গলবারের বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ১৩৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি। বৈরুতের গভর্নর মারওয়ান আবৌদ জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে শহরের প্রায় অর্ধেক ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন অন্তত তিন লাখ মানুষ। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়েছে লেবানিজ সেনাবাহিনীর হাতে। এ ছাড়া হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে লেবাননের মন্ত্রিসভা।
প্রবল বিস্ফোরণে কয়েক মাইলব্যাপী বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়েছে। এমনকি ১৫০ মাইল দূর থেকেও অনুভূত হয়েছে এর প্রভাব।এমন ভয়াবহ ঘটনায় তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব। বিস্ফোরণের কারণ এখনো নিশ্চিত না হলেও বন্দরে বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জমা রাখাকেই দায়ী করছেন অনেকে। ইতোমধ্যেই বিপজ্জনক এ রাসায়নিক সরানোয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ দিয়েছে লেবানিজ সরকার। তবে স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, বিস্ফোরণের আগে ঘটনাস্থলের ওপর ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। স্থানীয় কিছু বাসিন্দা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ হতে দেখেছেন বলেও দাবি করেছেন। তবে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। লেবানিজ এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মানুষজন যে আগুনের ফুলকি দেখেছে তা ঝালাই কাজের সময় সৃষ্টি হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস জানিয়েছেন, বৈরুতে হামলার বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন এখনো নিশ্চিত নয়। তারা এ বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছেন।
সন্দেহভাজন কর্মকর্তারা গৃহবন্দী
বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় বন্দরের গোডাউনে বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুতে অবহেলার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় দায়ী সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। ঘটনার তদন্ত চলাকালে তাদের গৃহবন্দী করা হলো।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় গুদামে রাখা ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে। দেশটির কাস্টমস প্রধান বাদরি দাহের বলেছেন, এসব রাসায়নিক পদার্থ সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তার সংস্থা বললেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। কৃষিকাজের জন্য সার এবং বিস্ফোরক বানানোর জন্য অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়। সংবাদদাতারা বলছেন গুদামটিতে যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছিল এবং তা ছয় বছর ধরে অনিরাপদ অবস্থায় সেখানে পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে ২০১৩ সালে একটি জাহাজে করে এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বৈরুত বন্দরে এসেছিল।


আরো সংবাদ



premium cement