১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ত্রিপোলিতে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লিবীয় বাহিনীর

ত্রিপোলির প্রধান বিমানবন্দর থেকে হাফতার বাহিনীকে হটিয়ে দেয়ার পর জিএনএ সৈন্যদের উল্লাস : ইন্টারনেট -

বুধবার লিবিয়ার সরকারবিরোধী বাহিনীর হাত থেকে (খলিফা হাফতারের বাহিনী) প্রধান বিমানবন্দরটি উদ্ধার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ত্রিপোলি সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করা হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী।
লিবিয়ার সেনাবাহিনী এক ঘোষণায় জানায় যে, দক্ষিণ-পূর্ব দিকের অন্য একটি শহরে অভিযানে গেছে সেনাবাহিনী। পশ্চিম লিবিয়ার যুদ্ধবাজ (ওয়ারলর্ড) খলিফা হাফতারের সর্বশেষ দুর্গের পতন ঘটাতে তারা সেখানে যাত্রা শুরু করেছে। এ অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে ‘ভলকানো অব রেইজ’ (রাগের আগ্নেয়গিরি)। এই অভিযানের মুখপাত্র মোস্তফা আল-মাজেই বলেছেন, ত্রিপোলি মুক্ত এবং পুরোপুরি সুরক্ষিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা রাজধানীর দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত তারহুনা শহরের প্রশাসনিক সীমানায় পৌঁছেছি।
আল-মাজেই নিশ্চিত করেছেন, লিবিয়ার সেনাবাহিনী ত্রিপোলি থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে তারহুনার ফাম মালঘা অঞ্চলে প্রবেশ করেছে।
আল-মাজেই বলেন, ত্রিপোলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার (১১২ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বের তারহুনা থেকে ওয়ালিদ শহরের দিকে খালিফা হাফতারের মিলিশিয়া বাহিনীর সামরিক যানকে যেতে দেখা গেছে। লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সেনাবাহিনী বুধবার হাফতারের মিলিশিয়া বাহিনীর দখল থেকে ত্রিপোলি বিমানবন্দর পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। লিবিয়ার সরকার মার্চ মাসে রাজধানীতে আক্রমণ প্রতিরোধ করতে ‘অপারেশন পিস স্টর্ম’ নামের অভিযান শুরু করে। সম্প্রতি হাফতার বাহিনীকে হটিয়ে আল-ওয়াতিয়া বিমানঘাঁটিসহ কৌশলগত অবস্থানগুলো পুনরায় দখল করেছে সরকার। জাতিসঙ্ঘ-নেতৃত্বাধীন চুক্তির আওতায় ২০১৫ সালে লিবিয়ার সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে হাফতার বাহিনীর সামরিক আগ্র্রাসনের কারণে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
লিবিয়ার বিদ্রোহী নেতা জেনারেল খলিফা হাফতারের অনুগত বাহিনী ত্রিপোলি বিমানবন্দরের আশপাশে অবস্থান নেয়ার পর তাদের ওপর গোলাবর্ষণ করে দেশটির সরকারি সেনারা। লিবিয়ার সেনারা অপারেশন ‘ভলকানো অব রেইজ’ নামে অভিযান চালায় এবং ত্রিপোলি বিমানবন্দরের দক্ষিণাংশে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে। এ অভিযানে হাফতার বাহিনীর তিনটি সাঁজোয়া যান ধ্বংস হয়। পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১২ জন আহত হন। সরকারি সেনাদের ছোড়া কয়েকটি গোলা ত্রিপোলির একটি পার্কে আঘাত হানলে এসব মানুষ হতাহত হয়।
লিবিয়ার শাসক কর্নেল গাদ্দাফি ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর দেশটির রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙে পড়েছে, চলছে গৃহযুদ্ধ, যাতে জড়িয়ে পড়েছে বিদেশী শক্তিগুলোও। ত্রিপোলিতে জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল-সররাজের সরকার বর্তমানে ক্ষমতাসীন হলেও লিবিয়ার নানা অংশ নিয়ন্ত্রণকারী বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মোকাবেলা করতে হচ্ছে তাদের।
গত বছর থেকেই লিবিয়ার পূর্বাংশ নিয়ন্ত্রণকারী সামরিক নেতা জেনারেল খলিফা হাফতার ত্রিপোলি দখল করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তার বাহিনী এখন ত্রিপোলির সরকারের আক্রমণের মুখে পিছু হটছে। লিবিয়ার শহরগুলো এখন এক একটি নগররাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হানান সালেহ বলছেন, গৃহযুদ্ধরত সব পক্ষই বেসামরিক মানুষদের প্রতি একই রকম নির্মম আচরণ করেছে। তবে বিশেষ করে খলিফা হাফতারের বাহিনী এমন সব অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধ বলেও বিবেচিত হতে পারে।
লিবিয়ার দ্বিতীয় প্রধান শহর বেনগাজির উগ্রপন্থীদের তাড়িয়ে জেনারেল খলিফা হাফতারের উত্থান ঘটে ২০১৪ সালে। জেনারেল হাফতার কর্নেল গাদ্দাফির সাথে তার বৈরিতার জন্য লিবিয়ায় সুপরিচিত। তিনি নির্বাসিত হিসেবে অনেক বছর যুক্তরাষ্ট্রে ভার্জিনিয়ার ল্যাংলিতে কাটিয়েছেন। এ শহরেই মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর প্রধান দফতর। সেখানে বসেই গাদ্দাফির পতনের ছক কষতেন জেনারেল হাফতার। এখন তিনি বেনগাজির নিয়ন্ত্রক এবং ত্রিপোলিতে অভিযান চালিয়ে তিনি চেয়েছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফায়েজ আল সেরাজের সরকারকে উৎখাত করে লিবিয়াকে আবার এক রাষ্ট্রে পরিণত করতে। তখন থেকেই এটা স্পষ্ট ছিল যে এখানে বিদেশী শক্তি জড়িয়ে পড়বে; পরে বাস্তবে তাই হয়েছে।
ত্রিপোলি থেকে ৫৫ মাইল দূরের পশ্চিম দিকের তারহুনা শহরটি জেনারেল হাফতারের ঘাঁটি এবং এটি নিয়ন্ত্রণ করে আল-কানিয়াত নামে একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠী, যা প্রধানত গাদ্দাফি সরকারের অনুগতদের নিয়ে গড়া। ত্রিপোলি সরকারের অনুগত বাহিনী তারহুনার দিকে এগোচ্ছে; যারা একসময় ছিল গাদ্দাফি সরকারের বিরোধী।


আরো সংবাদ



premium cement
চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২

সকল