২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নিরাপত্তা পরিষদের ভার্চুয়াল বৈঠক

করোনাভাইরাস বিশ্ব শান্তিকে হুমকিতে ফেলছে : গুতেরেস

পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা পরিষদের ঐক্য ও সঙ্কল্পের ওপর গুরুত্বারোপ
করোনাভাইরাস বিশ্ব শান্তিকে হুমকিতে ফেলছে : গুতেরেস -

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযোগে সন্ত্রাসী হামলা বাড়তে পারে বলে বিশ্বকে সতর্ক করেছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। গত বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এক সতর্ক বার্তায় তিনি বলেছেন, করোনার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা। সামাজিক স্তরে অশান্তি ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ওই বৈঠকে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব প্রতিটি দেশকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘করোনার মোকাবেলা নিয়ে প্রতিটি দেশ ব্যস্ত। আর তার সুযোগ নিতে পারে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। জৈব অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। তাই বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। করোনার মতো মহামারীর মোকাবেলায় শক্তিশালী দেশগুলোকে পারস্পরিক বিরোধ ভুলে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস। এখনই এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘মহামারীর সাথে ঐক্যবদ্ধ লড়াইতে যে দুর্বলতা প্রকট হচ্ছে, তা গোটা বিশ্বকেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিতে পারে। মহামারীর জেরে আন্তর্জাতিক শান্তিপ্রক্রিয়া বিঘিœত হতে পারে। ফলে বাড়তে পারে হিংসাত্মক কার্যকলাপ, সন্ত্রাসী হামলার মতো ঘটনা। তাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইকে হালকাভাবে নিলে চলবে না।’ গত ২৩ মার্চ বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতি আহ্বান করেছিলেন গুতেরেস। তিনি আরো বলেন, ‘যখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল ঠিক তখনই সব আঞ্চলিক, রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক সঙ্ঘাত নিরসনের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করেছিল করোনাভাইরাস মহামারী। এই উদ্বেগজনক মুহূর্তে কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ঐক্য ও সংহতির ইঙ্গিত অনেক বড় একটি পাওয়া হবে।’ কোভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতিতে শান্তি ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে নিরাপত্তা পরিষদের জড়িত হওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন গুতেরেস।
গুতেরেস মহামারী থেকে বৈশ্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যান্য ঝুঁকির বিষয় উল্লেখ করেছেন। যেমন, এ সময়টিতে সশস্ত্র দলগুলো সম্ভাব্য জৈব অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানোর একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে; সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থা কমে আসছে; অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়ছে; মহামারী প্রাদুর্ভাবের কারণে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি; অনিশ্চয়তার কারণে কিছু দেশে আরও বিভাজন ও অশান্তি ছড়ানো; এবং কোভিড-১৯ বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক চ্যালেঞ্জকেও বাড়িয়ে তুলেছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হয়। ইতোমধ্যেই বিশ্বের ২০৯টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবার করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। চীনে সাম্প্রতিক সময়ে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমতে থাকলেও অন্যান্য দেশে বিপর্যয় তৈরি করেছে করোনা। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, স্পেনের মতো দেশগুলোও করোনার সাথে পেরে উঠছে না। বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ করোনার কারণে চাকরি হারাচ্ছে। লোকজন এক প্রকার গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি বেশি দিন স্থায়ী হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মারাত্মক সঙ্কট তৈরি হবে।


আরো সংবাদ



premium cement