ভাঙার দ্বারপ্রান্তে মার্কিন তালেবান শান্তিচুক্তি
যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সরকারের বিরুদ্ধে শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তালেবানের- আলজাজিরা
- ০৭ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় করা যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তি ভাঙনের মুখে বলে জানিয়েছে তালেবান। এর কারণ হিসেবে সম্প্রতি শান্তিচুক্তির আওতাভুক্ত এলাকাগুলোতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে মার্কিন সেনারা, এমন অভিযোগ করেছে তালেবান। চুক্তির শর্ত অমান্য করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। তবে চুক্তি ভঙ্গের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে মার্কিন প্রশাসন।
এ ছাড়া আফগান সরকারের কাছে বন্দী পাঁচ হাজার তালেবান সদস্যের মুক্তি বিলম্ব হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে এসব চুক্তিভঙ্গের মধ্যে পড়ে বলেও সতর্ক করেছেন তালেবান নেতারা। তালেবান বলছে, তারা আফগান নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রাম্য অঞ্চলের চৌকিতে হামলা সীমাবদ্ধ করেছিল এবং শহর বা সামরিক স্থাপনায় আন্তর্জাতিক বাহিনী বা আফগান বাহিনীর ওপর হামলাও চালায়নি।
তালেবান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সরকার অব্যাহতভাবে চুক্তির লঙ্ঘন করলে সহিংসতা আরো বৃদ্ধি পাবে। চুক্তির অব্যাহত লঙ্ঘন অবিশ্বাসের এমন পরিবেশ তৈরি করবে, যা কেবল চুক্তিগুলোকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, বরং মুজাহিদীনদেরও একই ধরনের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য করবে এবং এতে করে লড়াইয়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে। তালেবানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা আমেরিকানদের গুরুত্ব সহকারে চুক্তির বিষয়বস্তু মেনে চলতে এবং তাদের মিত্রদের এই চুক্তি পুরোপুরি মেনে চলার জন্য সতর্ক করতে বলছি।
তালেবান, আফগান সরকারকে এক হাজার সরকারি বন্দীর বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পাঁচ হাজার তালেবান বন্দীকে মুক্তি দেয়ার ক্ষেত্রে বারবার বিলম্বের ব্যাখ্যা হিসেবে ‘অসমর্থনযোগ্য যুক্তি’ উপস্থাপন করার অভিযোগ এনেছে। আফগানিস্তানের মার্কিন সেনাদের পক্ষ থেকে তালেবানের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়েছে যে, তারা এই চুক্তির সামরিক শর্তাবলি বজায় রেখেছে এবং তালেবানের এই বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই।
শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে গত সপ্তাহেই তালেবান বন্দীদের মুক্তি দেয়ার কথা ছিল আফগানিস্তান সরকারের। কাবুলে তালেবান প্রতিনিধিদের সাথে দু’দিনের বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার। ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।
তালেবান মুখপাত্র জানিয়েছে, পাঁচ হাজার বন্দীর মধ্যে প্রথম ধাপে শতাধিক নেতাকে মুক্তি দেয়ার কথা। পর্যায়ক্রমে বাকিদের মুক্তির বিষয়ে আফগানিস্তান সরকার রাজি হয়েছে। গত বুধবার কাবুলে প্রথমবারের মতো আফগান সরকারের সাথে বৈঠক করেন তালেবান প্রতিনিধিরা।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে যুক্তরাষ্ট্র পর্যায়ক্রমে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেবে এবং আফগান সরকার তালেবান বন্দীদের মুক্তি দেবে; কিন্তু ওই চুক্তির কোনো অংশ ছিল না আফগান সরকার। এ নিয়ে আফগান সরকারের ভেতরে ক্ষোভ রয়েছে এবং তারা বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে খুব একটা আন্তরিক নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা