২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

লকডাউনে দিশেহারা দরিদ্র ভারতীয়রা

না খেয়ে মারা যাওয়ার শঙ্কা
-

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লকডাউন শুরু করেছে ভারত। সবাইকে থাকতে বলা হয়েছে ঘরে। তবে দেশটির দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল বহু লোকের জন্য এটি কোনো সুবন্দোবস্ত নয়। লকডাউন ঘোষণার পর দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল মানুষের মধ্যে করোনার চেয়েও না খেয়ে মরার ভয় জেঁকে বসেছে।
লকডাউন পরিস্থিতিতে আলী হাসাসের খাবার কিনে খাওয়ার মতো কোনো টাকা নেই তার হাতে। মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই দিন মধ্যরাত থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিন সপ্তাহ ধরে দেশ লকডাউনে থাকবে বলে ঘোষণা করেছেন। এমনিতে রাজধানী দিল্লির শহরতলি অঞ্চল নয়ডার লেবার চক অঞ্চল সব সময় পরিপূর্ণ থাকে কাজের খোঁজে থাকা নির্মাণশ্রমিকে। ভবন নির্মাতারা এই জায়গায় এসে শ্রমিক ভাড়া করে নিয়ে যান। তবে জনতা কারফিউ চলাকালে রোববার সকালে বিবিসির সাংবাদিক বিকাশ যখন ওই এলাকায় যান, তখন এলাকাটি ফাঁকা, পুরোপুরি শান্ত ও চুপচাপ। শুধু পাখির কিচিরমিচির শোনা যাচ্ছিল; যা এলাকাটিতে কল্পনাও করা যায় না বলে মন্তব্য তার।
এদিক ওদিক তাকিয়ে এক কোনো কয়েকজন লোককে দেখতে পান বিকাশ। নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে তিনি তাদের জিজ্ঞেস করেন, তারা জনতা কারফিউ মেনে চলছে কি না। সেখানে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বানডা জেলা থেকে কাজের খোঁজে আসা রমেশ কুমার জানান, তাদের ভাড়া নেয়ার জন্য এখানে কেউ নাও আসতে পারেন এটা জানেন তিনি, কিন্তু তারপরও কোনো কাজ পাওয়া যায় কিনা দেখতে এসেছেন।
রমেশ বলেন, ‘প্রতিদিন আমি ৬০০ রুপি উপার্জন করি। ঘরে খাওয়ার লোক পাঁচজন। ঘরে যে খাবার আছে কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। করোনাভাইরাসের ভয় আমারও আছে, কিন্তু আমার সন্তানরা না খেয়ে আছে, এটি সহ্য করতে পারব না আমি।
ভারতজুড়ে কোটি কোটি দৈনিক মজুরের এই একই অবস্থা। তিন সপ্তাহ লকডাউন চলার সময় তাদের আয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এ রকম অনেক পরিবারের মজুদ খাবার শেষ হয়ে যেতে পারে।
বুধবার নাগাদ ভারতে করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা ৫০০ জনেরও বেশি এবং মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০ জনের, এমনটিই জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। উত্তর প্রদেশ, কেরালা ও রাজধানী দিল্লিসহ বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার রমেশের মতো শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কেন্দ্রের মোদি সরকারও লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দৈনিক মজুরিনির্ভর লোকজনকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু এসব অর্থ ও অন্যান্য সহায়তা যথাযথভাবে তাদের কাছে পৌঁছাবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আন্তর্জাতিক লেবার অরগানাইজেশনের (আইএলও) বলছে, ভারতের শ্রমিকদের অন্তত ৯০ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত, যাদের অনেকেই নিরাপত্তারক্ষী, ক্লিনার, রিকশাচালক, হকার, মেথর ও গৃহকর্মী। অধিকাংশই পেনশনের আওতায় নেই, অসুস্থতাজনিত ছুটি, সবেতন ছুটি বা কোনো ধরনের ইন্স্যুরেন্সও নেই তাদের। অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও নেই, দৈনিক চাহিদা পূরণে নগদ টাকার ওপরই নির্ভর করেন তারা। অনেকেই কাজের খোঁজে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়া অভিবাসী শ্রমিক। এর অর্থ যে রাজ্যে কাজ করছেন সেই রাজ্যের বাসিন্দা তারা নন। এমন অনেক লোক আছেন যারা সারা বছর ধরে কাজের খোঁজে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ঘোরেন, জনসংখ্যার ভাসমান এই অংশকে নিয়েও সমস্যা আছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত

সকল