১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গাদের পক্ষে আইসিজেতে আইনজীবী নিয়োগ মালদ্বীপের

-

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিপীড়নের বিচারের জন্য জাতিসঙ্ঘের সর্বোচ্চ আদালতে আইসিজেতে মানবাধিকার আইনজীবী আমাল ক্লুনিকে নিয়োগ করেছে মালদ্বীপ। গতকাল বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মালদ্বীপ সরকার থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
মালদ্বীপ সরকার জানায়, আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয়ে তারা আমাল ক্লুনিকে নিয়োগ দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা ও চলমান মামলায় প্রমাণাদি ধ্বংস রোধে আইসিজের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় তারা। আমাল ক্লুনিকে উদ্ধৃত করে মালদ্বীপের সরকার বলেছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের গণহত্যার জবাদিহি ও বেঁচে থাকাদের সঠিক বিচারে কাজ করতে চায় আমাল ক্লুনি।
২০১৭ সালে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া আইসিজেতে গণহত্যা রোধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায় দেয় আইসিজে। রায়ে আইসিজে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা রোধে জরুরি ব্যবস্থা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছিল। মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের মামলা লড়েছিলেন আমাল ক্লুনি। ২০১৫ সালে জাতিসঙ্ঘের আদালতে নাশিদের ১৫ বছরের সাজাকে বেআইনি হিসেবে নিয়ে আসেন এই আইনজীবী।
গত মাসে আইসিজের বিচারকরা সর্বসম্মত রায়ে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়। তবে ওআইসির পক্ষে করা গাম্বিয়ার করা ওই মামলায় পূর্ণাঙ্গ রায় দেয়নি আইসিজে। এতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। এমন সময় আমাল ক্লুনিকে আইনজীবী নিয়োগ করেছে মালদ্বীপ।
২০১৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের পতনের পর সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ও আরো কিছু ভিন্নমতাবলম্বীকে নির্দোষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই আইনি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আমাল ক্লুনি। বর্তমানে সেই মোহাম্মদ নাশিদ জাতীয় পার্লামেন্টের স্পিকার। এ দেশটির সরকার বলেছে, তারা মিয়ানমারের বিষয়ে আইসিজের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। অন্য দিকে আমাল ক্লুনি বলেছেন, মিয়ানমারের গণহত্যার বিচার দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত। জীবিত রোহিঙ্গাদের বিচারবিভাগীয় প্রতিকার দেয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করব সামনের দিনগুলোতে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ দোসররা। পুড়িয়ে মারা হয় জ্যান্ত মানুষকে। স্বজন, ছেলেমেয়ের সামনে ধর্ষণ করা হয় নারীকে। গুলি করে অকাতরে মানুষ হত্যা করে। পুড়িয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। ফলে জীবন বাঁচাতে কমপক্ষে সাত লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement