২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জাপানে টাইফুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ সেনাবাহিনী মোতায়েন

-

‘ক্যাটাগরি-৩ মাত্রার শক্তিশালী টাইফুন হাগিবিসের আঘাতের পর গতকাল রোববার বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে হাজার হাজার সেনা ও উদ্ধারকর্মীকে প্রেরণ করেছে জাপান। সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে প্রলয়ঙ্কারী টাইফুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩-এ দাঁড়িয়েছে। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা। ঘূর্ণিঝড়ে ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছে, এ ছাড়া আহত হয়েছে আরো ১৬৬ জন। কার্যত এ ঘূর্ণিঝড়ে রাজধানী টোকিও অচল হয়ে পড়েছে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় শক্তিশালী টাইফুনটি হনশু দ্বীপের উপকূল দিয়ে জাপানের স্থলভাগের দিকে উঠে আসে। গতকাল রোববার সকালে দুর্বল হয়ে পড়া ঝড়টি পূর্ব উপকূলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, প্রায় পাঁচ লাখ বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাজধানীর নারিতা ও হানিদা বিমানবন্দরে বিমান উড্ডয়ন-অবতরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে রোববারের (১৩ অক্টোবর) ৮০০ এর অধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। টোকিওর কান্তো এলাকায় জারি করা রেল পরিষেবা স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই এলাকায় অনেক ট্রেন চলতে শুরু করেছে। তবে পূর্ব জাপানের জন্য এখনো ওই নির্দেশনা জারি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জরুরি সভা আহ্বান করেছেন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘টাইফুনের আঘাতে আহতের প্রতি সমবেদনা ও নিহতদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করছি।’
তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাকআউটস (বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতা), জলাবদ্ধতা ও পরিবহন পরিষেবা স্থগিতের বিষয়ে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা সর্বসাধারণকে ভূমিধস ও অন্যান্য ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলছি।’
ঝড়ের কারণে জাপানের মধ্যাঞ্চলের নাগানো এলাকায় মারাত্মক বন্যা দেখা দিয়েছে। চিকুমা নদীর পানি বৃদ্ধিতে বন্যার পানি কোনো কোনো বাড়ির দ্বিতীয় তলাতেও উঠে গেছে। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত মধ্য জাপানের নাগানো ও অন্য এলাকায় ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড ও পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর মোট ২৭ হাজার সদস্যকে প্রেরণ করা হয়েছে।
আটক মানুষদের উদ্ধারে তল্লাশি চালাতে হেলিকপ্টারও ব্যবহার করছে সেনাবাহিনী। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হেলিকপ্টারের দৃষ্টি আকর্ষণে হাত নাড়াচ্ছে আটকে পড়া মানুষ। নাগানোর জরুরি উদ্ধার বিভাগের কর্মকর্তা ইয়াশিরো ইয়ামাগুচি বলেন, রাতের মধ্যে আমরা ৪২৭টি বাড়ির প্রায় এক হাজার ৪১৭ জন বাসিন্দাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তিনি জানান নদীর পানি না বাড়লেও আবাসিক এলাকাগুলোতে পানির উচ্চতা বাড়ছে। গত মাসে জাপানে আঘাত হানে আরেকটি শক্তিশালী টাইফুন ফাক্সাই। ওই ঝড়ের কারণে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় বিঘিœত হয় পরিবহন চলাচল। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ব্যাপক এলাকা। ওই ঝড়ের ক্ষত কাটিয়ে ওঠার মধ্যেই নতুন টাইফুন আঘাত হানে।
এর আগে জাপানের ইতিহাসে এমন প্রলয়ঙ্করী ঝড় দেখা যায় ১৯৫৮ সালে। সে বছর টাইফুন কানোগাওয়ার এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ফিলিপাইনের তাগালোগ ভাষায় সুপার টাইফুন ‘হাগিবিস’ অর্থ ‘গতি’ স্থানীয় সময় গত শনিবার সন্ধ্যায় জাপানের হনশু দ্বীপে আছড়ে পড়ে।

 


আরো সংবাদ



premium cement