২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পুড়ে ছাই হচ্ছে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’

স্যাটেলাইট থেকে নেয়া ছবিতে আমাজন জঙ্গলে আগুনের দৃশ্য : এএফপি -

পৃথিবীতে যতটুকু অক্সিজেন আছে তার ২০ শতাংশ আসে আমাজন বন থেকে। প্রতি বছর ২০০ কোটি টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এই বন। যে কারণে এটাকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ বলা হয়।
এ ছাড়া পৃথিবীর বেশির ভাগ নদীর উৎস আমাজন। এখানে রয়েছে ৪৫ লাখ প্রজাতির পোকামাকড়, বাস করে তিন শতাধিক উপজাতি। অথচ ‘পৃথিবীর ফুসফুস’খ্যাত আমাজন আজ হুমকির মুখে। প্রতিনিয়ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এই বন পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।
ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ (ইনপে) বলছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত আমাজনের ব্রাজিল অংশে ৭২ হাজার ৮৪৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের তুলনায় যা ৮০ শতাংশ বেশি এবং ২০১৩ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। সংস্থাটির হিসাব মতে, দাবানলে প্রতি মিনিটে আমাজন প্রায় ১০ হাজার বর্গমিটার এলাকা পুড়ে যাচ্ছে। এভাবে পুড়তে থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী আন্দোলনে বিশাল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা।
৭০ লাখ বর্গকিলোমিটার অববাহিকা পরিবেষ্টিত এই জঙ্গলের প্রায় ৫৫ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাটি মূলত আর্দ্র জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত। ৯টি দেশজুড়ে এই অরণ্য বিস্তৃৃত। আমাজন জঙ্গলের ৬০ ভাগ ব্রাজিলে, ১৩ ভাগ পেরুতে এবং বাকি অংশ রয়েছে কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম এবং ফরাসি গায়ানায়।
২০১৩ সাল থেকে আমাজন বনে অঙ্গিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে গবেষণা করছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স। গত ২০ আগস্ট প্রকাশিত নতুন এক রিপোর্টে সংস্থাটি জানিয়েছে, আমাজন বন রেকর্ড হারে পুড়ছে। ইতোমধ্যে ব্রাজিলের রোন্ডানিয়া, আমাজোনাস, পারা, মাতো গ্রোসো অঞ্চলের কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। আমাজন বনে আগুন লাগার ঘটনা নতুন নয়। তবে সেখানে এবারের মতো আগুন আগে কখনো ছড়ায়নি।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার উপগ্রহ চিত্রেও ধরা পড়েছে আমাজনের ৯ হাজার ৫০৭টি নতুন দাবানলের চিত্র। আমাজনের আগুনের ওপর নজর রাখছে নাসা। আগুনের তীব্রতার ছবিও পাঠাচ্ছে নাসার একাধিক স্যাটেলাইট। তবে আগুনের থেকেও বিজ্ঞানীদের বেশি ভাবিয়ে তুলছে আগুন থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া।
আমাজন বন থেকে ২৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ব্রাজিলের সাও পাওলো। সেখানকার আকাশও ঘনকালো হয়ে আছে। সূর্যের মুখ ঢাকা পড়েছে। চার দিকে শুধু কুণ্ডুলী পাকানো ধোঁয়া। সবুজ বনের ওপর দিয়ে লাল অগ্নিশিখা বয়ে বেড়াচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্যাটেলাইট প্রকল্প কোপের্নিকাস আগুনের ধ্বংসকাণ্ডের একটি ম্যাপ প্রকাশ করেছে। ব্রাজিল থেকে পূর্ব আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত ‘আগুন পথের’ চিহ্ন আঁকা হয়েছে। দেশটির অর্ধেক জায়গাজুড়েই এখন কালো ধোঁয়া। সেই ধোঁয়া পাশের পেরু, বলিভিয়া এবং প্যারাগুয়েতেও পৌঁছে গেছে।
স্থানীয় পরিবেশবিদদের ধারণা, এই আগুন প্রাকৃতিকভাবে লাগেনি। তাহলে কিভাবে লেগেছে? ব্রাজিলের ফেডেরাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একাংশ বলছেন, শুকনো বাতাসে দাবানল জ্বলে ওঠা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এ ক্ষেত্রে দাবানলের প্রকোপে আগুন লাগেনি বলেই মনে করছেন তারা। বিজ্ঞানীদের মতে, অনেক সময়েই চাষের জন্য জমি বা খামার তৈরি করতে ইচ্ছাকৃতভাবে জঙ্গলে আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয় গ্রামবাসী। সেখানেও এমনটাই হচ্ছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জলবায়ুু বিজ্ঞানী কার্লোস নোর্বে বলেছেন, গবাদিপশুর চারণভূমি হিসেবে জমি ব্যবহারের জন্য জায়গা পরিষ্কার করতে শুকনো আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন কৃষকরা। এ সময় আমাজন বনে খুব সহজেই আগুন লাগিয়ে দেয়া যায়। যদিও সাও-পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের গবেষক নোর্বের মতে, আমাজনে কর্মরত এনজিওগুলো কৃষিকাজে আগুন ব্যবহার করে না। বরং লোকজনকে আগুন ব্যবহার না করতে উৎসাহিত করে তারা। সূত্র : সিএনএন


আরো সংবাদ



premium cement
‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধান বিরোধী নয় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মিজানুরের ইন্তেকাল থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সাথে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ গ্যাস বিতরণে সিস্টেম লস ২২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে : নসরুল হামিদ গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের

সকল