লাদাখের বিরোধপূর্ণ সীমান্ত থেকে ভারত ও চীনের সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন
- এনডিটিভি
- ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ঘোষিত সময়ের মধ্যেই পূর্ব লাদাখে বিরোধপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের কাজ শেষ করেছে ভারত ও চীন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র বিষয়টি এনডিটিভিকে জানিয়েছে। সূত্রটি বলেছে, শিগগির এই অঞ্চলে নিয়মিত টহল শুরু হবে। এ ছাড়া, দীপাবলি উপলক্ষে চীনের পক্ষ থেকে ভারতীয়দের মিষ্টিও উপহার দেয়া হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রটি জানিয়েছে, পূর্ব লাদাখের বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চল ডেপসাং ও ডেমচক অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার পুরোপুরি শেষ করেছে ভারত ও চীন।
সূত্রটি গত বুধবার জানিয়েছে, যাচাই প্রক্রিয়া চলছে এবং টহল কীভাবে হবে বিষয়টি সেখানে নিয়োজিত কমান্ডাররাই ঠিক করবেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর ভারতের চীনা রাষ্ট্রদূত শু ফেইহং কলকাতায় সাংবাদিকদের জানান, দুই দেশের মধ্যে ‘গুরুত্বপূর্ণ অনেক সমঝোতা’ হয়েছে। ভারতে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে গত সপ্তাহে রাশিয়ায় ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে দুই নেতা গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছেন।
এই সমঝোতাগুলো আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক আরো উন্নয়নের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে। আমি আশা করি যে, এই ঐকমত্যের নির্দেশনায় আমাদের সম্পর্ক ভবিষ্যতে মসৃণভাবে এগিয়ে যাবে এবং আমাদের দুই পক্ষের নির্দিষ্ট মতবিরোধের কারণে এটি সীমাবদ্ধ বা বাধাপ্রাপ্ত হবে না।’ এর আগে, গত ২১ অক্টোবর ভারত ঘোষণা করেছিল, সঙ্ঘাতপূর্ণ দুই এলাকা ডেপসাং এবং ডেমচকে একটি টহল চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুসারে, উভয় দেশের সৈন্যরা ২০২০ সালে শুরু হওয়া উত্তেজনার আগে তাদের অবস্থানে ফিরে যাবে।
এ ছাড়া এই চুক্তির আওতায় বিবাদ অবসানের লক্ষ্যে সামরিক স্থাপনা ভেঙে ফেলা এবং সেখানকার ভূমিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। এর আগে, গত ২৬ অক্টোবর নতুন সীমান্তচুক্তি মেনে সেনা সরানো শুরু করে চীন ও ভারত। সে সময় বলা হয়েছিল, প্রক্রিয়া শেষ করতে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চীনা সেনাদের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার মধ্যে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চীনা হামলায় নিহত হন ২০ জন ভারতীয় সেনাসদস্য। কয়েকজন চীনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন।
ওই সংঘর্ষের পর থেকেই কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চুশুল-মলডো পয়েন্টে দুই সেনার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে এলএসির কিছু এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পেছোনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনাসংখ্যা কমানোর’ (ডিএসক্যালেশন) বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। কিন্তু প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া ফিঙ্গার এরিয়া, দেপসাং উপত্যকাসহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে সমস্যা অমীমাংসিতই ছিল। অবশেষে সেসব সমস্যার সমাধান হলো।