Naya Diganta

বিদেশী ঋণ পরিশোধে চাপ বাড়ছে : দ্বিগুণ খরচ সুদে

দেশের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকার বিভিন্ন দেশ, সংস্থা থেকে ঋণ করছে। সেই উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশকে যে পরিমাণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গত ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) তাতে ছাড় করেনি ১৬১ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার। যা প্রতিশ্রুতির ২২.২৩ শতাংশ। বাংলাদেশ বিদেশী ঋণ পরিশোধে এখন বেশ চাপে রয়েছে। আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি পরিমাণ সুদ পরিশোধে ব্যয় করতে হচ্ছে। গত ৯ মাসে সুদসহ দায় পরিশোধ করতে হয়েছে ২৫৭ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ তথ্য থেকে এটা জানা গেছে।

ইআরডির হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সরকার উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতির বিপরীতে বৈদেশিক ঋণ পেয়েছে ৫৬৩ কোটি ১৬ লাখ ডলার। এখানে ঋণ খাতে ৫৩০ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং অনুদান ৩২ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর যেখানে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এই সময়ের জন্য ছিল ৭২৪ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। প্রতিশ্রুতির মধ্যে ঋণের পরিমাণ ৬৭৪ কোটি ৩০ হাজার ডলার এবং অনুদান ৫০ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এখানে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি ২৬২ কোটি ২ লাখ ৭০ হাজার ডলারের বিপরীতে ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৪০ কোটি ২৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। জাপান ২০৩ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার প্রতিশ্রুতি দিলেও ছাড় করেছে ১৩৫ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিশ^ব্যাংকের আইডিএ ৯৬ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার ও অন্যান্য থেকে ৫০ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার ডলার ছাড় হয়েছে। তবে প্রতিশ্রুতি না দিয়েও অর্থ ছাড় করেছে এআইআইবি তিন কোটি ৪০ লাখ ১০ হাজার ডলার, ভারত ১৯ কোটি ৯০ লাখ ৮০ হাজার ডলার, চীন ৩৬ কোটি ১৭ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং রাশিয়া ৮০ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার। তাদের এই ছাড় পাইপলাইনে থাকা প্রতিশ্রুতির অংশ।

পরিশোধের পরিস্থিতি : ইআরডি বলছে, সুদ পরিশোধের খরচ দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। সরকারের পরিশোধ করা অর্থের মধ্যে সুদ হিসেবে ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আসল ১৫১ কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। অথচ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে ৮৪ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। ঋণ পরিশোধের ব্যয় এতটা বৃদ্ধির পেছনে সুদ পরিশোধই মূলত ভূমিকা রাখছে। চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ডলার। যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে ৪৮ কোটি ৫৯ লাখ ডলার সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়। যার তুলনায় এটি দ্বিগুণেরও বেশি।
চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ ৯ মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ প্রতিশ্রুতি দ্বিগুণেরও বেশি। উন্নয়ন সহযোগীরা এই সময়ে ৭২৪ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ডলার ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩০৭ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে ৯৯২ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের।