বুয়েটে নিরাপত্তা চেয়ে ছাত্রলীগপন্থী শিক্ষার্থীদের ফের স্মারকলিপি
- ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:১০
কালচারাল র্যাগিং বন্ধ ও নিরাপত্তা চেয়ে ফের বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভিসিকে স্মারকলিপি দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ছাত্রলীগপন্থী শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় ভিসিকে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর দ্বারা আমরা প্রায়ই অনলাইন ও সরাসরিভাবে হেনস্তা ও অপমানের শিকার হয়েছি। ২০২৩-এর ৩১ জুলাই সুনামগঞ্জে আটক ২৪ বুয়েট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়, আমরা একটি মানববন্ধনের (আগস্ট ৬, ২০২৪) মাধ্যমে তার সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করি মহামান্য আদালতের কাছে, যেখানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ ছিল ‘যদি কোনো শিক্ষার্থী আসলেই দোষী হয় তবে তার আমরা শাস্তি চাই, নির্দোষ সকলের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।’ কিন্তু এই মানববন্ধনের পরেই বিষয়টি বদলাতে শুরু করে, মানববন্ধনে দাঁড়ানোর কারণে সব ছাত্রকে ডেকে ডেকে জবাবদিহিতা চাওয়া হয়, নানাভাবে হল বা ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ব্যাচ ও যার যার নিজ নিজ ব্যাচের ছাত্রদের দ্বারা।
তারা বলেন, বিভিন্নভাবে হলে সিট বাতিল অথবা টার্ম বহিষ্কারের ভীতি প্রদর্শন করে হলে অরিত্র ঘোষ এবং মিশু দত্তকে রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত আহসান উল্লাহ হলের কমন রুমে জবাবদিহি করা হয়। এ ছাড়া মাঠে সবাইকে ডেকে এনে সবার সামনে আমাদের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া এবং একই সাথে ক্যাম্পাসে কিছু মানুষ দ্বারা অসংলগ্ন আচরণ আমাদের অপমানের শামিল। রাতে একসাথে কাচ্চি খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে মিথ্যাচার হয়েছে এবং সেখানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এসেছিলেন এমন বানোয়াট মিথ্যা বুয়েটের চলমান ছাত্রদের ফেসবুক গ্রুপে দিয়ে ভিত্তিহীনভাবে সবার সামনে আমাদেরকে অপরাধী বানিয়ে আমাদের ওপর যেসব জাস্টিস শুরু করে তা আমরা ভিসি বরারবর জমা দিয়েছিলাম।
তারা আরো বলেন, ভিসি আমাদেরকে আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত আমরা তার কোনোরূপ তদন্ত রিপোর্ট বা দোষীদের ওপর শাস্তি আরোপ হতে দেখিনি। যার ফলে নিপীড়ন ও সামাজিকভাবে আমাদেরকে হেনস্তা করার দিনের পর দিন তারা নতুন নতুন ধরন বের করা শুরু করে। যেমন প্রথমে সব গ্রুপ থেকে বের করে দেয়া, যাতে আমরা তথ্য ঘাটতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান গতির সাথে খাপ খাইয়ে যেতে না পারি, ক্লাবগুলো থেকে বের করে দিয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে দূর করে দেয়া। খেলাধুলা এমনকি ব্যাচের বা ডিপার্টমেন্টের যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মানসিকভাবে অত্যাচার চালানো এবং একটা পর্যায়ে আমাদের সাথে স্টাডি ম্যাটেরিয়ালস শেয়ার না করার জন্য ঘোষণা করে একটি দল এবং তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর তাদের মতামত চাপিয়ে দেয়। কেউ যদি না মানে তাকেও হেনস্তা করে হবে এমন হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়।
তারা বলেন, ক্যাম্পাসের এ রকম অস্থিতিশীল পরিবেশে জামিনে থাকা আসামিদের সাথে একই ক্যাম্পাসে থাকা যেহেতু খুব ভীতিকর তাই যতদিন পুলিশ কেসের নিষ্পত্তি হচ্ছে না তাদেরকে সাময়িকভাবে অ্যাকাডেমিকভাবে বহিষ্কার করে ক্যাম্পাসে তাদের গতিবিধি রোধ করা হোক। এ ছাড়াও যারা তাদের সাথে জড়িত বা মদদদাতা হয়ে তাদের সবকিছুতে রাখার জন্য পেছন থেকে কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকে শনাক্ত করে তদন্তের জন্য গোয়েন্দা নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হোক।
এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দেয়া আগের অভিযোগপত্রের উত্তরে কোনো যথাযথ পদক্ষেপ খেয়াল না করার কথা জানিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা নেয়া এবং আগামী অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে বুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের তদন্তের রিপোর্ট এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।