Naya Diganta

তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৩ ডিগ্রি, লোডশেডিং রেকর্ড ৩২০০ মেগাওয়াট

সোমবার দেশে তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সময় নজিরবিহীন বিদ্যুৎ ঘাটতির ফলে সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়ে লোডশেডিং প্রায় ৩২০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।

বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ২টায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারে (এনএলডিসি) রেকর্ড ৩ হাজার ১৯৬ মেগাওয়াট ঘাটতির কথা জানানো হয়।

দিনের ‘পিক আওয়ারে’ ১৬ হাজার ২০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৫৩ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ ঘাটতি ৩ হাজার ৪৪৭ মেগাওয়াটের।

সন্ধ্যার ‘পিক আওয়ারে’ চাহিদা ১৭ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে বিদ্যুৎ ঘাটতি আরো বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রোববারেও অত্যধিক লোডশেডিং দেখা যায়। এদিন দুপুরে ১ হাজার ৮৬৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।

এর আগে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ৯টায় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড করা হয় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট; তবে চলমান তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সারাদেশে লোডশেডিং অব্যাহত রয়েছে।

বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির অবস্থা ভয়াবহ।

তবে বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থার গ্রামীণ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, যে পরিমাণ লোডশেডিং হয় রিপোর্টে তার চেয়ে কম আসে। কারণ বিদ্যুৎ সরবরাহে স্থানীয়ভাবে হওয়া বিঘ্নগুলো সবসময় তালিকাভুক্ত হয় না। এতে গ্রাহকদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। যে কারণে দিন-রাতে কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ছাড়াই কাটিয়ে দিতে হয়।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এত ঘন ঘন হয় যেকোনো সমস্যা হলে গ্রাহকদের দিনে ও রাতে উভয় ক্ষেত্রেই বিদ্যুৎ পেতে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।’

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে কৌশলগতভাবে গ্রামাঞ্চলে স্থানান্তর করা হয়। এই নীতিগত সিদ্ধান্ত এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরো বাড়িয়ে তুলছে।

এদিকে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, প্রায় ৪ হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে দৈনিক ৩ হাজার ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট।

এই গ্যাস সংকটের কারণে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে, যা এই সংকটময় সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহে আরও চাপ সৃষ্টি করেছে।

সূত্র : ইউএনবি