Naya Diganta

হোমিওপ্যাথির আড়ালে চলছে জীবনঘাতী রেকটিফাইড স্পিরিটের ব্যবসা


বরিশালের বাকেরগঞ্জে বেশ কিছু হোমিওপ্যাথি ফার্মেসিতে চিকিৎসার আড়ালে অবাধে চলছে রেকটিফাইড স্পিরিটের ব্যবসা। অল্প পুঁজিতে অধিক লাভ ও এক রকম নিরাপদ ব্যবসা মনে করে প্রশাসনের নাকের ডগায় বেশির ভাগ হোমিও ফার্মেসিতে এই অবৈধ ব্যবসাটি চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। সহজলভ্য ও স্বল্পমূল্য হওয়ায় স্কুলগামী ছাত্র, কিশোর, যুবকসহ সর্বস্তরের লোকজন এখন রেকটিফাইড স্পিরিট খেয়ে নেশায় ঝুঁকে পড়ছে।
গত কয়েক বছরে রেকটিফাইড স্পিরিট খেয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে একাধিক মৃত্যু অথবা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। ২০১৪ সালে বাকেরগঞ্জ বন্দর এলাকার দুইজন ও ২০২৩ সালের শেষের দিকে একই এলাকার মিঠুন দে নামের আরো একজন যুবক রেকটিফাইড স্পিরিট খেয়ে মারা যায় বলে পরিবার সূত্র জানিয়েছে।

বাকেরগঞ্জের ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় ৬০টি হোমিওপ্যাথি ফার্মেসির দোকান রয়েছে। এর মধ্যে বাকেরগঞ্জ পৌর শহরেই রয়েছে ১০টি, যার ৫টিতে রেকটিফাইড স্পিরিট নেশাদ্রব্য হিসেবে বিক্রি করা হয় বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। এ ছাড়া ইউনিয়নগুলোর বেশির ভাগ হোমিওপ্যাথি ফার্মেসিতেও বিক্রি হয় এই জীবনঘাতী নেশা দ্রব্যটি।
রেকটিফাইড স্পিরিটের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোনায়েম সাদ বলেন, রেকটিফাইড স্পিরিট পান করলে দেহে এক ধরনের বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয়। যার ফলে কেউ কেউ মারাও যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের তেমন কিছুই করার থাকে না। তা ছাড়া নেশা বৃদ্ধির জন্য রেকটিফাইড স্পিরিটের সাথে মিথাইল স্পিরিট (ফার্নিচারে ব্যবহৃত স্পিরিট) মেশানো হয়। এতে ক্ষতির পরিমাণটা আরো বেড়ে যায়।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক) ডা: আবদুল্লাহ বলেন, হোমিও ফার্মেসিতে ওষুধ হিসেবে রেকটিফাইড স্পিরিট নির্দিষ্ট পরিমাণে রাখা যায়। তবে, এর জন্য মাদকদ্রব্য অধিদফতর থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হয়। এগুলো কোনো সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করার নিয়ম নেই।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, হোমিওপ্যাথি ফার্মেসিতে রেকটিফাইড স্পিরিট রাখার একটা নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। এর বেশি সংরক্ষণ করা বা জনসাধারণের কাছে বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এদের ব্যাপারে আমরা শিগগিরই তদন্ত শুরু করব।