Naya Diganta

চৌগাছায় নেই ডাইরিয়া ওয়ার্ড, গরমে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি

চৌগাছায় নেই ডাইরিয়া ওয়ার্ড, গরমে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি

যশোরের চৌগাছা হাসপাতালে নেই ডাইরিয়া ওয়ার্ড। তীব্র তাপপ্রবাহে অসুস্থ হয়ে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী চৌগাছা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। এতে ভ্যাপসা গরমে রোগীরা আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সিট না পাওয়ায় দুর্ভোগ আরো বেড়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সরেজমিনে চৌগাছার এ ৫০ শয্যা হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, মহিলা ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা ৩৮, পুরুষ ওয়ার্ডে ২৩ ও শিশু ওয়ার্ডে ২৪ জন মোট ৮৫ জন। এরমধ্যে ঠান্ডা-গরমজনিত সর্দিজ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহবিভিন্ন রোগী রয়েছেন। মোট রোগী রয়েছে ৮৫ জন। তীব্র তাপপ্রবাহে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি অসুস্থ হচ্ছেন।

প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর রোগীদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে আরেক বিড়ম্বনায়। হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী থাকায় নতুন রোগীদের ঠাঁই মিলছে মেঝে ও বারান্দায়। বিপুল পরিমাণ রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড়ে হাসপাতালের পরিবেশও নাজুক হয়ে পড়েছে। এরসাথে যুক্ত হয়েছে পল্লীবিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে চলছে না ফ্যান। ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন কক্ষে সিলিং ফ্যান রয়েছে। এরমধ্যে বেশকটি নষ্ট। ফলে ফ্যানের অভাবে ভ্যাপসা গরমে রোগীদের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে।

উপজেলার ইছাপুর গ্রামের রাজকুমারের স্ত্রী ববিতা রাণী (৪২), আন্দারকোটা গ্রামের ইউছুফ আলীর স্ত্রী রুপা খাতুন (২৮), সলুয়া গ্রামের সুমন হোসেনের স্ত্রী সানিয়া খাতুন (৩০) জানান, প্রচণ্ড গরমে পেটের যন্ত্রণা ও ডাইরিয়া হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালের ভর্তি হই। কিন্তু এখানে রোগীর চাপে ও গরমে রোগীরা আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

শিশু ওয়ার্ডের রোগী নাফিসা ১০ মাস, তাফসিরুল (৬), সুমন (৩), নাদিরা (৫) ও ইমন ৭ মাস তাদের স্বজনরা জানান, প্রচণ্ড গরমে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের কারণে তাদের শিশুদের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সিট পাননি। ওষুধও নেই। ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। গরমে রোগী-স্বজন সবাই কষ্ট পাচ্ছেন।

এ সময় চৌগাছা প্রেস ক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু জাফর বলেন, রাতে আমার ছোট ভাই প্রভাষক মিন্টু রহমানের হঠাৎ প্রচণ্ড পেট ব্যাথা শুরু হয়। চৌগাছা হাসপাতালে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করি। ধারণ ক্ষমতার চাইতে রোগী অনেক বেশি তাই সিট মেলেনি। মেজেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। অসহনীয় গরমে অসুস্থ হচ্ছেন মানুষ, হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি।

হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ তৃপ্তি রানি বলেন, ডায়রিয়ার চিকিৎসায় আগে একমাসে যে ওষুধ লাগতো, এখন একদিনেই তা লাগছে। তবে ওষুধ ও স্যালাইন যা আছে তা দিয়ে আগামী প্রায় দুই সপ্তাহ চলবে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আল ইমরান বলেন, মূলত গরমের তীব্রতা বাড়ায় এখন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। সাথে সর্দি-জ্বরসহ তাপপ্রবাহজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন।

হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, মূলত গরমের তীব্রতা বাড়ায় এখন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। সাথে সর্দি-জ্বরসহ তাপপ্রবাহজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ভতি রোগীর চাপ বাড়লেও আমাদের লোকবল কম।

তিনি বলেন, ফ্যান মেরামত করা হচ্ছে। বেশকটি ফ্যান নষ্ট রয়েছে সেগুলো মেরামত করা হবে।