Naya Diganta
রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১১ বছর

ছেলে হারা মা সাথিয়ার কান্না যেন থামছেই না

রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১১ বছর
রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১১ বছর

সাভার বাসস্ট্যান্ডে রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর পার হলেও এখনো ভবন ধসের ঘটনায় নিহত শ্রমিক লাল মিয়া’র (১৮) মা ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ সাথিয়ার কান্না যেন আর থামছেই না।

বুধবার ছিল রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর পূর্তি। এদিন এক দুখিনি মা সাথিয়া সকাল থেকে ধসে পড়া ভবনকে সামনে রেখে হাতে নিহত ছেলে লাল মিয়ার ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে কান্না করছেন। তিনি বিলাপ করছেন আর বলছেন, ‘হায় আমার বুকের ধন, তুই ছাড়া এ দুনিয়ায় আমার বেঁচে থাকা বৃথা। তুই আমাকে ছেড়ে দীর্ঘ ১১টি বছর পার করলি। তোকে ছাড়া আমি আর থাকতে পারছি না।’

নিহত শ্রমিক লাল মিয়ার মা সাথিয়া জানান, তার ছেলে ধসে পড়া রানা প্লাজার তিন তলায় অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বলেন, ভবন ধসের পর প্রথমে আমার ছেলে নিখোঁজ ছিল। ঠিক ১৬ দিন পর আমার বুকের ধন লাল মিয়ার মাজা থেকে উপরের অংশের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে সাভার পৌর এলাকার বক্তারপুরে দাফন করা হয়। আমার ছেলে যখন রানা প্লাজা ধসে নিহত হয় তখন তার স্ত্রী আলেয়া আক্তার চলে যায়। ছেলের বাবা মথুর হোসেন ৮ বছরের আগে মারা যায়। বর্তমানে আমি ৪ মেয়ে ২ ছেলে নিয়ে সাভার পৌর এলাকার বক্তারপুরে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছি।

ছেলের মৃত্যুর পর পৌনে ৩ শতাংশ জায়গা তাকে কিনে দেয়া হয় দাবি করে তিনি আরো বলেন, এই ছাড়া আমি আর কোনো টাকা-পয়সা পাইনি। তিনি আরো জানান, বর্তমানে আমি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে চলছি।

উল্লেখ্য, ২৪ এপ্রিল ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ট্রাজেডি বিশ্বের একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী শ্রমিক দুর্ঘটনা। ভয়াবহ এ ঘটনায় সরকারি হিসাবে ১ হাজার ১৩৬ জন শ্রমিক নিহত ও ২ হাজার ৪৩৮ জনকে আহত উদ্ধার করা হয়।