Naya Diganta

মুসলিমদের সাথে কংগ্রেসকে জড়িয়ে মোদির বক্তব্য : প্রতিবাদ রাহুলের

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে দেশের সম্পদ শুধু সং‌খ্যালঘুদের (মুসলিমদের বুঝানো হয়েছে) মধ্যে বণ্টন করবে বলে রাজস্থানের জনসভায় মন্তব্য করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তার এই দাবির প্রতিবাদ করেছে কংগ্রেসের।

কংগ্রেসের দাবি, লোকসভা ভোটের প্রচারে এই প্রথম সরাসরি সংখ্যালঘুদের নাম করে আক্রমণ করলেন মোদি।

হতাশা থেকেই মোদি এ পথে এগিয়েছেন বলে দাবি তাদের। বিরোধীদের মতে, নির্বাচন কমিশন আর জীবিত নেই। তা আরো দুর্ভাগ্যজনক।

সম্প্রতি হায়দরাবাদে রাহুল গান্ধী দাবি করেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কোনো শ্রেণীর হাতে কত সম্পদ আছে তা জানতে সমীক্ষা করা হবে।

সোমবার রাজস্থানের বাঁশোয়াড়ার এক জনসভায় রাহুলের মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, ‘মনমোহন সিংহজির সরকার ক্ষমতায় থাকার সময়েই জানিয়েছিল দেশের সম্পদে সবচেয়ে আগে মুসলিমদের অধিকার আছে। এবার তারা বলছে, ক্ষমতায় এলে আপনাদের রোজগারের অর্থ মুসলিম, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বণ্টন করবে।’

তার কথায়, ‘কংগ্রেসের ইস্তাহারেই বলা হচ্ছে যে মা-বোনেদের সোনার হিসাব করা হবে। তারপর সেই সম্পদ বণ্টন করা হবে তাদের মধ্যে যাদের দেশের সম্পত্তিতে সবচেয়ে আগে অধিকার বলে মনমোহন সিংহের সরকার জানিয়েছিল। শহুরে নকশালদের এই ভাবনা মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্রকে পর্যন্ত ছাড়বে না।’

রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, ‘প্রথম দফার (লোকসভা ভোটের) হতাশার পরে নরেন্দ্র মোদির মিথ্যার স্তর এমন পর্যায়ে নেমেছে যে ভয়ে তিনি বিষয় থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে চাইছেন। কংগ্রেসের বিপ্লবী ইস্তাহারে যে বিপুল জনসমর্থন পাচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছে।’

একই সাথে মনমোহন সিংহের পুরনো ভিডিও পোস্ট করে কংগ্রেসের দাবি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুসলিম সংখ্যালঘুদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কংগ্রেস আরো মনে করিয়ে দিয়েছে, মোদির মা-বাবাও ছয় সন্তানের জনক। তৃণমূল নেতা সাকেত গোখেলের মতে, তার ‘গ্যারান্টি’র কথা যে আর কেউ বিশ্বাস করছেন না তা বুঝেছেন মোদি। তাই ঘৃণা-ভাষণ শুরু করেছেন।

পাশাপাশি রাজস্থানের জেলোরের একটি সভায় নাম উল্লেখ না করে সনিয়া গান্ধীকে আক্রমণ করেন মোদি। রাজস্থানের সভায় তিনি বলেন, যারা ভোটে জিততে পারেন না তারা মাঠ ছেড়ে পালিয়ে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন।

কয়েক মাস আগে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন সনিয়া। তার আগে দীর্ঘদিন লোকসভায় রায়বরেলী ও অমেঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।

সোমবার রাজস্থানের জেলোরে বিজেপি প্রার্থী লম্বারাম চৌধুরির হয়ে প্রচারের সময়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, রাজস্থান থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার সদস্যরা কি রাজস্থানের বিষয়ে রাজ্যসভায় প্রশ্ন তোলেন?

তার বক্তব্য, ‘কংগ্রেস রাজস্থান থেকে এক দক্ষিণী নেতাকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে। তিনি কি কখনো রাজস্থান নিয়ে কোনো কথা বলেছেন? আপনারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও রাজ্যসভায় পাঠিয়েছেন। তিনি অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু তাকে কখনো রাজ্যসভায় দেখেছেন কি? এখন আপনারা আবার এক নেতাকে বাঁচালেন। যারা ভোটে জিততে পারেন না তারাই রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা