Naya Diganta

কৃষি জমি সুরক্ষা আইন দ্রুত পাসের পরামর্শ হাইকোর্টের

কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬ অতি দ্রুত আইন আকারে পাস করার জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এতে বলা হয়েছে, জাপান ও ফিনল্যান্ডের প্রণীত আইন যতটুকু সম্ভব অনুসরণ ও সমন্বয় করে আমাদের দেশের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি ‘দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ (ওংষধহফং উবাবষড়ঢ়সবহঃ অঁঃযড়ৎরঃু) নামে একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনের নিমিত্তে দ্বীপ উন্নয়ন আইন (ওংষধহফং উবাবষড়ঢ়সবহঃং অপঃ) দ্রুত প্রণয়নের জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দেয়া হলো।
বিচারপতি মো: আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্টের বেঞ্চ ২০২২ সালের ২ জুন দেয়া একটি মামলার রায়ে এসব পরামর্শ দিয়েছেন। সম্প্রতি ১৫ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
রায়ে বলা হয়েছে, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর উপরোল্লিখিত ধারা ৪ পর্যালোচনায় এটি কাঁচের মতো পরিষ্কার যে, বিপণন তথা বিক্রির উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান থেকে মাটি বা বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু স্বীকৃত মতেই আলোচ্য মোকদ্দমায় দরখাস্তকারী বিপণন বা বিক্রির উদ্দেশ্যে কোনো মাটি উত্তোলন করছেন না।

রায়ে আরো বলা হয়েছে, ফসলি জমিতে পুকুর খননের বিধিনিষেধ আরোপ করে ‘কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬’ খসড়া আইন প্রণয়ন করা হলেও কোনো এক অজানা কারণে এটি এখনো আলোর মুখ দেখছে না।
নওগাঁর মো: মিজানুর রহমানকে পুকুর খনন বন্ধ করতে ভূমি অফিসের নোটিশ অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া এ রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২ (১) মোতাবেক সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনো ভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণী পরিবর্তন প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কেবলমাত্র সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইন দ্বারা নাগরিকের উপরোল্লিখিত সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনো ভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণী পরিবর্তন-এ বিধিনিষেধ আরোপ করা তথা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২(১) এর মর্মার্থ। সুতরাং এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনো ভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণী পরিবর্তন সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার। কোনোভাবেই উক্ত মৌলিক অধিকার তথা সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনো ভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণী পরিবর্তনে বাধা প্রদান করা যাবে না। নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনো ভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণী পরিবর্তন এর অধিকারে পরিবর্তন, বিধিনিষেধ এবং যেকোনো প্রকারের নিয়ন্ত্রণ কেবলমাত্র সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের মাধ্যমে করতে হবে।
মোকদ্দমায় জনৈক দুলাল হোসেন, ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা, মান্দা-কুশুম্বা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, মান্দা, নওগাঁ বিগত ইংরেজি ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে দরখাস্তকারীকে নোটিশ প্রদান-পূর্বক বলেন যে, তিনি তদন্তে দেখতে পান যে, দরখাস্তকারী ‘মাটি ও বালু ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০’ অমান্য করে পুকুর খনন করছে।