Naya Diganta

ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট

ইউরো ২০২৪’র চূড়ান্ত দল ঘোষনার আগে শেষ দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচের একটিতেও জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। যে কারণে দল নির্বাচনে কিছুটা হলেও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছেন ইংলিশ বস গ্যারেথ সাউথগেট।

ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিত দু’টি ম্যাচের একটি হার ও একটিতে ড্র করেছে ইংল্যান্ড। জুড বেলিংহামের শেষ মুহূর্তে গোলে মঙ্গলবার বেলজিয়ামের সাথে ২-২ গোলের স্বস্তির ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। এর আগে প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল।

দল যখন সত্যিকার অর্থেই চাপে থাকে তখন কার্যত প্রীতি ম্যাচের ফলাফল দলের মূল চিত্রকে অনেক সময় প্রতিফলিত করে না। কারণ ইনজুরি এখানে বড় একটি বিষয়। বেলজিয়ামের বিপক্ষে ইনজুরির কারণে বেশ কিছু খেলোয়াড় অনুপস্থিত থাকায় সাউথগেটকে বাধ্য হয়ে তরুণদের উপর নির্ভর করতে হয়েছে। তারপরও এই দুই ম্যাচ থেকে সাউথগেট গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ঠিকই বেছে নিয়েছেন।

জুনে জার্মানির মাটিতে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে যাবে ইংল্যান্ড। প্রথমবারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে তাদেরকে সুস্পষ্ট ফেবারিট হিসেবে মানা হচ্ছে। বিশেষ করে ২০২১ সালের ফাইনালে ইতালির কাছে পরাজয়ের পর এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না সাউথগেটের শিষ্যরা। তার ওপর ইংল্যান্ডের বস হিসেবে সম্ভবত সাউথগেটের সামনে এটাই ইউরো জয়ের শেষ সুযোগ।

১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের পর প্রথম কোনো বড় শিরোপা জন্য মুখিয়ে থাকা ইংল্যান্ড যেকোনো মূল্যে শিরোপা খরা কাটাতে চায়। ২০১৬ সাল থেকে সাউথগেটের অধীনে খেলছে ইংল্যান্ড। ইনজুরির কারণে প্রস্তুতিতে বড় বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন সাউথগেট, ‘আমাকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কারণ আমার হাতে সত্যিকার অর্থেই যারা এই মুহূর্তে আছে তাদের নিয়ে কমপক্ষে শিরোপা লড়াই করা যায় না। ইনজুরি এখানে বড় সমস্যা। প্রস্তুতিও এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নতুন খেলোয়াড়রা তাদের প্রমাণে সফল হয়েছে। তাদেরকে আমাদের সুযোগ করে দিতে হবে। তবে তাদের সময়ের প্রয়োজন। এই মুহূর্তে অনেকেই দলের বাইরে রয়েছে। ক্লাব মৌসুমের শেষ আকর্ষণটাও এখনো বাকি। যে কারণে সব খেলোয়াড়দের নিয়ে এই মুহূর্তে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া যাচ্ছে না। আমাদের সম্ভাব্য সেরা সিদ্ধান্তই নিতে হবে। তবে সেজন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

ব্রাজিলের বিপক্ষে ইংল্যান্ড অনেকটা সাদামাটা পারফর্ম করেছে। ২০২২ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে পরাজয়ের পর এটাই ইংল্যান্ডের প্রথম হার। দুই ম্যাচে ইংল্যান্ড অবশ্য একটি বিষয় নিশ্চিত করেছে, আক্রমনভাগে তাদের শক্তির কোনো কমতি নেই। ইনজুরিতে থাকা হ্যারি কেন ও বুকায়ো সাকার অনুপস্থিতিতে জার্ড বোয়েন ও ইভান টনি কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। টনি পেনাল্টি থেকে গোলও করেছেন।

মধ্যমাঠও শক্তিশালী হিসেবে দাবি করতেই পারে ইংল্যান্ড। বেলিংহাম, ডিক্লান রাইস নিজেদের প্রমাণ করে চলেছেন। তবে প্রথমবারের মতো মূল দলে সুযোগ পাওয়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোবি মেইনু নিজেদের নিয়মিত করার দাবি করতেই পারেন।

সাউথগেট বলেন, ‘ইউনাইটেডের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে মাত্র ১৫ ম্যাচ খেলা ১৮ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার ইংল্যান্ডের মধ্যমাঠে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে যা এতদিন কেউ দেখেনি। চাপের মধ্যে থেকে সে যেভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে তা সবাই দেখেছে। দারুনভাবে সে দলের সাথে মানিয়ে নিয়েছে। সে বয়সে এখনো তরুণ। তাকে কিছুদিন সময় দিতে হবে। তবে, ইংল্যান্ডের রক্ষনভাগ নিয়ে আরো একবার শঙ্কা বেড়েছে। বিশেষ করে ব্রাজিল ও বেলজিয়ামের বিপক্ষে সেন্ট্রাল ডিফেন্সের ভুলে গোল হজম করতে হয়েছে।’

হ্যারি ম্যাগুয়েরেকে নিয়ে আশাবাদী সাউথগেট। যদিও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে নিয়মিত খেলতে পারছেন না ম্যাগুয়েরে। ইনজুরির কারণে বেলজিয়ামের বিপক্ষে তার পরিবর্তে দলে ছিলেন লুইস ডাঙ্ক। তার ভুলেই গোল হজম করতে হয়েছে।

সাউথগেট স্বীকার করেন এই জায়গায় আরো উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পরীক্ষাটা কঠিন। শিরোপা জিততে হলে সেভাবে নিজেদের প্রতিরোধ করতে হবে। শুধুমাত্র গোলের চিন্তা করলেই হবে না।

সূত্র : বাসস/এএফপি