Naya Diganta
ছিল না ওষুধ কেনার টাকা

ব্যথা সইতে না পেরে পেটে ছুরি ঢুকিয়ে আত্মহত্যা!

ছিল না ওষুধ কেনার টাকা

অভাবের সংসারে ওষুধ কেনার টাকা ছিল না। ওষুধ না খাওয়ায় বুকের ব্য থা তীব্র আকার ধারণ করে। যা সহ্য করতে না পেরে ঘরে থাকা ফল কাটা ছুরি নিজের পেটে ঢুকিয়ে দেন জয়নাল আবেদীন (৪৫)। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এমন তথ্য দেন নিহতের স্ত্রী মর্জিনা বেগম। ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মগবাজারের মধুবাগের একটি বাসায়।
তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম জানান, স্বামী জয়নাল রিকশা চালাতেন। তবে হার্ট ও কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চার বছর ঘরে রয়েছেন। তিনি বাসাবাড়িতে কাজ করেন। আর তাদের এক মেয়ে গার্মেন্টে চাকরি করেন।
পরিবারের একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায়, চার বছর ধরে হাঁপানি, হার্ট ও কিডনিজনিত সমস্যা নিয়ে ভুগছিলেন জয়নাল। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন নিয়মিত ওষুধ খেতে। কিন্তু অভাবের সংসারে নিয়মিত ঔষধ কিনে খেতে পারতেন না। স্ত্রী ও মেয়ে আয় করলেও সংসারের ব্যয় মেটাতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের। তা ছাড়া ওষুধের দামও ছিল অনেক বেশি। গত ৪ দিন কোনো ওষুধই খেতে দিতে পারেননি তিনি। পরে ব্যথা সহ্য করতে না পেরে নিজেই বলতে থাকেন ‘আমি আর সহ্য করতে পারেছি না, আমি কিন্তু আত্মহত্যা করমু’।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে সবার অগোচরে ফল কাটার ছুরি নিজের পেটে ঢুকিয়ে দেন তিনি। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ১০২ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক এসআই ইদ্রিস আলী বলেন, পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বুক ও পেটের ব্যথা সহ্য করতে না পেরে নিজের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে আত্মহত্য করেছেন জয়নাল আবেদীন। তার স্বপক্ষে বেশ কিছু প্রমাণও হাজির করেছেন। তবে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা সে ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। নিহত জয়নাল আবেদীন রংপুরের পীরগঞ্জ থানার হাসানপুর গ্রামের মৃত মোজামিয়ার ছেলে। বর্তমানে মগবাজার মধুবাগের ৩ নম্বর গলির একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন তিনি।