Naya Diganta

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়েনি : রাশিয়া

আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছরের উপস্থিতির সমালোচনা করে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, তারা আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনো লড়াই করেনি। তাস নিউজ এজেন্সিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার পর জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সহানুভূতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে এসেছিল। ওই সময় রাশিয়া ছিল সেই দেশগুলোর অন্যতম, যারা আফগানিস্তানে মার্কিন উপস্থিতির বিরোধিতা করেনি। কিন্তু ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে থেকেও তারা সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলা করেনি।
ল্যাভরভ আরো বলেন, ওই ভয়াবহ হামলার পর প্রেসিডেন্ট পুতিনই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশকে ফোন করেন এবং সাহায্য ও সমর্থনের প্রস্তাব দেন। সে সময় আফগানিস্তানে তাদের অভিযোগের ব্যাপারে কেউ আপত্তি করেনি বা আফগানিস্তানে মার্কিন জোট সৈন্যদের প্রবেশকে আগ্রাসন বা দখল বলে অভিহিত করেনি। কারণ সবাই সে সময় অনুভব করছিল, এই ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পাল্টা প্রতিরোধ করতে হবে। কিন্তু আফগানিস্তানে তাদের বিশ বছর অবস্থান প্রমাণ করেছে, তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের লড়াই করেনি।
সম্প্রতি রাশিয়ার মস্কোতে একটি কনসার্ট হলে সন্ত্রাসী হামলায় ১৩৭ জন নিহতের ঘটনায় সন্ত্রাসবাদ ইস্যুটি আবার সামনে চলে আসে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে আফগানিস্তানে অবস্থানের বিষয়টি নিয়ে এসব মন্তব্য করেন।
এ দিকে আফগানিস্তানের বর্তমান প্রশাসন মনে করে, মধ্য এশিয়ার দেশসহ প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করার জন্যই যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণ করেছিল। প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তান এসে দেশ দখল করে নিজেদের সামরিক ঘাঁটি তৈরি, মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ এবং এখানে থেকে তাদের কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে হুমকি দেয়ার জন্যই যুক্তরাষ্ট্র এসেছিল।
আফগানিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক শির আকা রোহানি বলেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরকে দোষারোপ করে। কিন্তু এটা সত্য যে, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে সন্ত্রাস দমন এবং জাতি গঠনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাজিব রহমান শামাল মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে আসায় দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখ্যযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করার সুনির্দিষ্ট যে লক্ষ্য নিয়ে তারা এসেছিল তা অর্জিত হয়নি।