Naya Diganta

দুর্গম পাহাড়ে চিকিৎসার অভাবে ৫ জনের মৃত্যু

দুর্গম পাহাড়ে চিকিৎসার অভাবে ৫ জনের মৃত্যু

রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী বরকল উপজেলার ভুষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগা চান্দবীঘাট এলাকায় প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসার অভাবে তীব্র জ্বর, পেট ব্যথা ও বমির সাথে রক্ষকরণে গত দেড় মাসে এক শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঁচজনের মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর দুর্গম এলাকায় বৃহস্পতিবার একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন চিত্তি মোহন চাকমা (৬০), বিমলেশ্বর চাকমা (৫৫), ডালিম কুমার চাকমা (৩৫), পত্ত রঞ্জন চাকমা (২৫), সোনি চাকমা (৮)। এরমধ্যে ডালিম কুমার চাকমা ও সোনি চাকমা বাবা-মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, মৃত্যুর আগে প্রত্যেকেরই তীব্র জ্বর ও বমির সাথে রক্তকরণ হয়েছে। ওই এলাকায় আরো ১৪ জনের পেট ব্যথা, জ্বর দেখা দেয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। পেট ব্যথা ও জ্বর দেখা দিলেই মৃত্যুর ভয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজনরা।

প্রথম দিকে স্থানীয়রা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। কিন্ত দেড়মাসে পরপর পাঁচজনের মৃত্যুতে এলাকাবাসীর মনে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ গত ১৭ মার্চ ডালিম কুমার চাকমার মেয়ে সোনি চাকমা জ্বর, পেট ব্যথা ও বমির সাথে রক্তক্ষরণে মারা যান। এর দুদিন আগে ১৫ মার্চ চিত্তি মোহন চাকমা (৬০) একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ডালিম কুমার চাকমা, ৭ ফেব্রুয়ারি বিমলেশ্বর চাকমা এবং সর্বপ্রথম গত ১০ জানুয়ারি পত্ত রঞ্জন চাকমা পেট ব্যথা, জ্বর ও বমির সাথে রক্তক্ষরণে মারা গেছেন।

বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মংক্যসিং রাখাইন সাগর জানান,‘এলাকাটি অতি দুর্গম। সেখানে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। আশেপাশে কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই। এতগুলো মানুষ মারা গেছে সে খবর এতদিন আমাদেরকে কেউ দেয়নি। খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমরা মেডিক্যাল টিম গঠন করে সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি।’

রাঙ্গামাটির সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী বলেন, আমার ধারণা খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকেই এ ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। মেডিক্যাল টিম নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে।

তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মংক্যসিং রাখাইন সাগরের নেতৃত্বে সাতজনের একটি মেডিক্যাল টিম চান্দবীঘাট এলাকায় গেছে। এলাকাটি অতি দুর্গম। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে মেডিক্যাল টিম গঠন করে চান্দবীঘাটে পাঠিয়েছি। আর যেন কোনো প্রাণহানি না হয় সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিচ্ছি। রোগীদের প্রয়োজনে রাঙ্গামাটি এনে চিকিৎসা দেয়া হবে।