Naya Diganta

গর্ভাবস্থায় মুখের ও শরীরের বিশেষ যত্ন

গর্ভাবস্থায় মায়েদের খাবারে অরুচি থাকে। পেট ফাঁপা থাকতে পারে অথবা ভরা ভরা লাগতে পারে। এ জন্য একেবারে বেশি না খেয়ে বারবার খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। একজন মানুষ সাধারণত দিনে তিনবার খাবার গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে তিনবারের পরিবর্তে পাঁচবার অল্প অল্প করে খাবার খাওয়া উচিত। কখনো কখনো একদম কম খেলে ছয় সাতবার খাওয়ানো উচিত। কারণ বমি বমি ভাবের কারণে এবং খাবারে অরুচির কারণে গর্ভবতী মায়েদের কেউ কেউ সামান্য খাবার খান বা একদম খেতে চান না। এ সময়ে দাঁত ও মুখের যতœ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি নিতে হবে। গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্য ফলিক এসিডের প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাসে অবশ্যই ফলিক এসিড দেয়া প্রয়োজন। ফলিক এসিডের অভাব হলে শিশুর গঠন ও গর্ভবতী মায়ের মুখে আলসার দেখা দিতে পারে। ফলিক এসিডের অভাবে ঠোঁট কাটা ও তালু কাটা শিশুর জন্ম হতে পারে। খাবারের পাশাপাশি ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় প্রোজস্টেরন হরমোন বেশি থাকায় মায়েদের কনস্টিপেশন এবং মুখের রোগ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া মাড়িতে প্রদাহ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় মাড়ির যতœ না নিলে নির্দিষ্ট সময়ের আগে এবং কম ওজনের শিশু জন্মগ্রহণ করতে পারে। এবরশন হতে পারে। অথচ গর্ভাবস্থায় তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে শুধু একবার দাঁতের স্কেলিং করিয়ে নিলে এ ধরনের সমস্যা থাকে না বললেই চলে। গর্ভাবস্থায় কনস্টিপেশন দেখা দিলে আঁশযুক্ত খাবার ও খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ফল থাকা প্রয়োজন। কারণ কনস্টিপেশন চলতে থাকলে মুখের অভ্যন্তরে আলসারসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় খেয়াল রাখতে হবে যে গর্ভবতী মা যেন দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করেন। অতিরিক্ত মানসিক চাপে দাঁত কামড়ানো, মুখে আলসার বা ক্ষত, মাড়ির রোগ এবং টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টে অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে গর্ভবতী মা অশান্তিতে থাকলে অথবা মানসিক অস্থিরতার মধ্যে জীবনযাপন করলে অটিস্টিক শিশুর জন্ম হতে পারে। আবার অনেক সময় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম হতে পারে। সবশেষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গর্ভবতী মায়ের মুখের স্বাস্থ্য শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে।
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
ইমপ্রেস ওরাল কেয়ার
বর্ণমালা সড়ক, ইব্রাহিমপুর, ঢাকা।
মোবাইল-০১৮১৭৫২১৮৯৭
ই-মেইল : dr.faruqu@gmail.com