Naya Diganta

দেশে আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে

দেশে আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে বলে আবারো স্বাস্থ্য অধিদফতর সতর্ক করে দিয়েছে। জুনের ১০ দিনে যত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে, তা মে মাসের ৩১ দিনের ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রায় সমান। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুসারে, জুনের গত ১০ দিনে ৯৯৯ আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে মে মাসের ৩১ দিনে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৩৬ জন।
এ অবস্থায় ডেঙ্গু বাড়ছে, সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ভার্চুয়ালি এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি বলেন, চলতি বছরে ঢাকার বাইরে তেমন রোগী ভর্তি নেই। বেশির ভাগ রোগী রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসাপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে ঢাকায় সর্বোচ্চ ১৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। সারা দেশে রোগী সংখ্যা কম থাকলেও আমরা সারা দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রত্যেক হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সব কিছু সরবরাহ করা হচ্ছে।

মহাপরিচালক বলেন, সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে এখন পর্যন্ত তুলনামূলক রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও ডেঙ্গু চিকিৎসায় সারা দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা ক্লিনিক্যালি তাদের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করেছি। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিন্ড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে। অন্য আরো কারণও থাকতে পারে। সেগুলো জানার জন্য ময়নাতদন্ত করা প্রয়োজন। কিন্তু মৃত ব্যক্তিদের পরিবার অনুমোদন দেবে না, আর এটা সাধারণ প্র্যাকটিসও নয়। ডেঙ্গু পরীক্ষায় কিছু ঘাটতি রয়েছে কি না জানতে চাইলে অধ্যাপক খুরশীদ আলম বলেন, যারা আমাদের কাছে আসছে তাদের ডায়াগনোসিস করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি। গণমাধ্যমসহ সবাইকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি। ‘জ্বর হলে সবাই যেন ডেঙ্গু পরীক্ষা করান’ মিডিয়ার মাধ্যমে সবার কাছে এই আহ্বান, জানান তিনি।

অধ্যাপক খুরশীদ আলম আরো বলেন, প্রত্যেক বিভাগে ডেঙ্গু চিকিৎসায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে মশা নিধন করাটা সবচেয়ে জরুরি। সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। একই সাথে প্রত্যেক হাসপাতালে মশারি সরবরাহ করা হচ্ছে তবে রোগীরা মশারির ভেতর থাকছেন না বলেও জানান স্বাস্থ্য ডিজি। হাসপাতাল শাখার পরিচালক জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষায় গুরুত্ব দিতে দেশের সব হাসপাতালকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি কতো গত বছরই নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। প্রত্যেক হাসপাতালে গাইডলাইন সরবরাহ করা হয়েছে।
ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পর রোগীদের জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। ডেঙ্গু রোগীদের সব ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে অধিদফতরের এমআইএস শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা: মো: শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য ও ডেঙ্গুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রোগীদের তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে হাসপাতালগুলোতে আসা রোগীদের মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।