Naya Diganta

এবার কোরবানির হাট কাঁপাবে ফরিদপুরের ডন

ফরিদপুরের সালথার বিশালাকার এই গরুটি এবার সারা দেশের দৃষ্টি কাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে : নয়া দিগন্ত


গায়ের রঙ সাদা-কালো। লম্বা ১২ ফিট ও উচ্চতা সাড়ে ৬ ফিটের মতো। মাত্র চার বছর বয়সে গরুটির ওজন হয়েছে ৪১ মণ। বিশাল আকৃতির এই গরুটি এবার ঈদে কোরবানির পশুর হাট কাঁপাবে বলে ধারণা করছেন অনেকে। গরুর মালিক ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের হড়েরকান্দী গ্রামে কৃষক আজিজুল মোল্যার ছেলে ব্র্যাকের কৃত্রিম প্রজনন কর্মী মো: রুবায়েত হোসেন। গরুটির নাম রাখা হয়েছে ফরিদপুরের-ডন। ইতোমধ্যে গরুটির ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর তা এক নজর দেখতে প্রতিদিন রুবায়েতের বাড়িতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। গরু ব্যবসায়ী ও দালালরাও ছুটে যাচ্ছে ওই বাড়িতে। তবে মালিক রুবায়েত আলোচিত গরুটি দালাল বা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। রুবায়েত হোসেন বলেন, গরুটিকে নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করে বড় করেছি। মাঝে মাঝে নিজেরা না খেয়ে গরুটিকে মাল্টা-কমলা, আঙ্গুর, কলা, ছোলা ও ভুসি কিনে খাইয়েছি। পাশাপাশি নিজে জমি বর্গা নিয়ে ঘাস আবাদ করে খাইয়েছি। আমার কোনো পরিকল্পনা ছিল না গরুটিকে এত বড় বানানোর; কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে লালন-পালন করেই আজ গরুটির ওজন হয়েছে ৪১ মণ। এটা মহান আল্লাহর নিয়ামত।
তিনি আরো বলেন, গরুটি কিনতে একজন প্রবাসী বিদেশ থেকে ফোন দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, দাম দেখাতে। দাম যা-ই হোক তিনিই কিনবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গরু কিনতে কোরবানির আগেই তিনি দেশে আসছেন। তবে তিনি যদি না কিনেন তাহলেও আমি কোনো দালাল বা ব্যবসায়ীর কাছে গরুটি বিক্রি করব না। সরাসরি যদি কেউ কেনে তাহলে বিক্রি করব। নইলে দেশের বড় বড় পশুর হাটের উঠাব। অনেকে অনেক ধরনের দাম বলছেন। তবে আমি ২৫ লাখ টাকার নিচে গরুটি বিক্রি করতে চাচ্ছি না। কারণ গরুটি লালন-পালন করতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন তুলে গরুর পেছনে খরচ করেছি।

গরু দেখতে আসা সুমন বলেন, আমার জীবনে আমি এত বড় গরু দেখিনি। তবে গরুর মালিকের বাড়ির যে অবস্থা দেখছি, তাতে মনে হচ্ছে তিনি অনেক গরিব। গরুটিকে লালন-পালন করতে গিয়ে তার মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে। এখন যদি সঠিক দামে গরুটি বিক্রি করতে পারেন তাহলে তার পোষাবে।
সালথা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: নাহিদুল ইসলাম বলেন, রুবায়েতকে অনেক আগে থেকেই গরুটি লালন-পালনের জন্য কয়েক দফা প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে গরুটির জন্য সবধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। নানা ধরনের রোগবালাইয়ের ওষুধ দেয়া হয়েছে। যে কারণে গরুটি দ্রুত বেড়ে উঠেছে ও রুবায়েত সফল হয়েছেন।
ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: এ কে এম আসজাদ বলেন, ফিজিয়ান জাতের গরু পালনে বেশির ভাগ মানুষ আগ্রহী নয়। তবে রুবায়েত এই জাতের গরু পালন করে সফল হয়েছেন। গরুটিকে মোটাতাজা করতে যাতে কোনো প্রকার ওষুধ প্রয়োগ না করা হয়, সে বিষয়ে আমরা নজর রাখছি।