Naya Diganta

প্রাণনাশী বোমার খোসায় সবুজ প্রাণ

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে আক্ষরিক অর্থে দখলদার ইসরাইল ‘জাহান্নামে’ পরিণত করেছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের অমানবিক নিগ্রহে অসংখ্য নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু এরপরও থেমে নেই গাজাবাসীর জীবনযাপন। তারা খুঁজে ফিরছে প্রাণের ছোঁয়া।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো কিছু স্থিরচিত্রে দেখা যাচ্ছে, ইসরাইলের ছোড়া প্রাণনাশী বোমার খোসায় সবুজ প্রাণের ছোঁয়া দিচ্ছেন আবদুল করিম আবু আতায়া নামের এক ফিলিস্তিনি হস্তশিল্পী। বোমা ও গ্যাসের খোসাগুলোতে তিনি ফুলগাছসহ নানা ধরনের উদ্ভিদ রোপণ করছেন।

একইসাথে সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন শৈল্পিক পণ্যও বানাচ্ছেন তিনি। গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও তার এই শান্তির বার্তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসা কুড়াচ্ছে।

বোমা কিংবা গ্যাসের ক্যানের ওপরের অংশ কেটে তার মধ্যে মাটি ভরে, গাছের বীজ ও চারা রোপণ করেন তিনি। বোমার ছোট ছোট অংশ দিয়ে তিনি তৈরি করেন তসবিহ। কিছু অংশ ব্যবহার করেন জায়নামাজ তৈরির কাজে। সীমান্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে তিনি এসব সংগ্রহ করেন।

৩৬ বছর বয়সী আবদুল করিম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী আমাদের ওপর বোমা, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে নিয়মিত। হামলার পর সেগুলোর খোসা পড়ে থাকে। আমি চিন্তা করলাম ওগুলো দিয়ে কিছু বানানো যায় কিনা। সেই চিন্তা থেকেই এগুলো দিয়ে গাছের টব, ফুলদানি, জায়নামাজ ও তসবিহ বানাতে শুরু করলাম।’

ফিলিস্তিনিদের মাতৃভূমিতে ফেরার আন্দোলন ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ কর্মসূচিতে নিয়মিতই অংশ নেন তিনি।

আবদুল করিম আরো বলেন, ‘যুদ্ধের উপকরণ দিয়ে শিল্পকর্ম বানিয়ে আমি বিশ্ববাসীকে জীবন ও শান্তির বার্তা দিতে চাই। তারা আমাদের প্রাণ কেড়ে নিতে এসব ছুড়লেও আমি চাই সেগুলোকে নান্দনিক শিল্পকর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে।’

মিডল ইস্ট মনিটরকে আবু আতায়া বলেন, ‘শিল্পকর্মগুলোর মাধ্যমে আমাদের দেশের পক্ষ থেকে ভালোবাসা আর জীবনের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই এবং এও জানাতে চাই যে আমরা উত্তরাধিকারসূত্রেই এই ভূখণ্ডের মালিক।’

সূত্র : আলজাজিরা স্টোরিজ ও আল-খালিজ অনলাইন