Naya Diganta
চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র

একই পুকুরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও মাছচাষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র
চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিসিক এলাকায় পাশাপাশি থাকা দু’টি পুকুরের ওপরে সারি সারি সাজানো সোলার প্যানেল। পুকুরের পানি থেকে একটু ওপরে বিশেষ পদ্ধতিতে বাতাস ও ঢেউ সামলাতে সক্ষম ফ্লোটারের ওপরে ভাসছে প্রায় এক হাজার ৫০০ সোলার প্যানেল। আর এর নিচেই রয়েছে বিভিন্ন জাতের মাছ। পুরো পুকুরের প্রায় অর্ধেক অংশজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে প্যানেলগুলো। আর প্যানেলগুলো পরিষ্কার করার জন্য প্রতিটি প্যানেলের পাশ দিয়ে রাখা হয়েছে পানি সরবরাহ লাইন। কোনো কারণে প্যানেলে ময়লা জমলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এভাবেই পুকুরে পানির ওপরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পানির নিচে মাছ চাষ করা হচ্ছে একই সাথে। দেশের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জেই একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে চালু হয়েছে পুকুরের পানিতে প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলানিউজ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি জুলস পাওয়ার লিমিটেড। বাস্তবায়নকারী সংস্থাটি জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আতাহার-বুলনপুরের বিসিক শিল্প এলাকায় নবাব অটোরাইস মিলের আওতায় নবাব মৎস্য খামার প্রকল্পের দু’টি পুকুরে স্থাপন করা হয়েছে এ ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যাচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। তারা আরো জানায়, গত সোমবার বিকেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২.৩ মেগাওয়াট হলেও প্রাথমিকভাবে পিক আওয়ারে (সূর্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকাকালে চার ঘণ্টা) গত তিন দিনে ঘণ্টা প্রতি সর্বোচ্চ ১.৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে ও কোনো জমি ব্যবহার না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। অন্য দিকে সোলার প্যানেল পানির ওপরে ভাসতে থাকায় টেকসই হয়। প্রকল্প এলাকার কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে এক বছর এ ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরে মাছচাষের কোনো ক্ষতি না হলে ব্যাপকহারে বাড়ানো হবে এমন প্রকল্প। পুকুরের অর্ধেক জায়গায় সোলার প্যানেল থাকায় ও সোলার প্যানেল সরানোর সুযোগ থাকায় মাছের পরিচর্যায় কোনো সমস্যা হয় না।

জুলস পাওয়ার লিমিটেডের হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট মো: নাহিদুজ্জামান বলেন, ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ছয় একর আয়তনের একটি জলাশয়ের ৫০ শতাংশ জমি ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে যেহেতু মাছচাষ হচ্ছে, তাই ফুডগ্রেডেড প্লাস্টিকের ফ্লোটার ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে মাছের ক্ষতি না হয়।
এর লাইফ টাইম প্রায় ২৫ বছর। ঝড় কিংবা টর্নেডোর কথা বিবেচনায় রেখে অ্যাংকরিং সিস্টেমও রাখা হয়েছে।